- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক | চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আরও একজন বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহতরা সবাই নিম্নআয়ের মানুষ—কেউ ভ্যানচালক, কেউ শ্রমিক, আবার কেউ ছোট ব্যবসায়ী।
নিহতরা হলেন নফরকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক খেদের আলী (৪০), খেজুরা হাসপাতালপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম (৪০), পিরোজখালী স্কুলপাড়ার রিপু ওরফে মোহাম্মদ লান্টু (৩০), শংকরচন্দ্র গ্রামের শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ টাওয়ারপাড়ার মিল শ্রমিক মোহাম্মদ সামির (৫৫) এবং এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরি পাড়ার শ্রমিক সরদার মোহাম্মদ লান্টু (৫২)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দিনমজুর আলিম উদ্দিন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের আলী জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিঙ্গেদহ বাজারে কয়েকজন একসঙ্গে অ্যালকোহল পান করেন। পরবর্তীতে একে একে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কয়েক দিনের ব্যবধানে ছয়জনের মৃত্যু হয়। রোববার (১২ অক্টোবর) রাতে চিকিৎসাধীন আরও একজন মারা গেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
তিনি বলেন, “নিহতদের পরিবারের সদস্যরা প্রথমে ঘটনাটি গোপন রাখলেও এখন পর্যন্ত চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ প্রত্যেক পরিবারের সঙ্গে কথা বলছে এবং ঘটনার উৎস অনুসন্ধান করছে।”
স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে গোপনে দেশি মদ বিক্রি হলেও প্রশাসনের নজরদারি ছিল না। তাদের অভিযোগ, “প্রশাসনের উদাসীনতা না থাকলে এতগুলো প্রাণহানি ঘটত না।”
চিকিৎসাধীন আলিম উদ্দিন জানান, “আমরা ভুট্টার গাড়ির কাজ করতাম। আমাদের সর্দার স্পিরিট পান করতে দেয়। আমি অল্প পরিমাণে খেয়েছিলাম, কিন্তু কয়েকদিন পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ি।”
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আফরিনা ইসলাম বলেন, “রোববার বিকেলে লান্টু মিয়া নামে একজনকে আনা হয়। জানা যায়, তিনি দুই দিন আগে অ্যালকোহল পান করেছিলেন। চিকিৎসার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়।”
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান জানান, “এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। আমরা মৃতদের দেহ মর্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অ্যালকোহলের উৎস ও দায়ীদের শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।”
এদিকে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, আর প্রশাসনের প্রতি দাবি উঠেছে—অবিলম্বে অবৈধ মদ বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর।