- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র হাতে ভাইরাল হওয়া যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন-এর ফেসবুক পোস্টকে 'মিথ্যাচার ও মানহানিকর' আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) শিবিরের আইন সম্পাদক আরমান হোসেন এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রশিবির সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে 'আদর্শিক সংগঠন' হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের যথেষ্ট মানহানি ঘটিয়েছেন, যা দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ৫০০ অনুযায়ী একটি ফৌজদারি অপরাধ।
শিবির অধ্যাপক মামুনকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তার দেওয়া পোস্টটি প্রত্যাহার করে ছাত্রশিবির ও জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছে। অন্যথায়, দণ্ডবিধি ১৮৬০ মোতাবেক ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলাসহ বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে বলে নোটিশে জানানো হয়েছে।
অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন তার ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করে লেখেন, "ধর্মের নামে রাজনীতি করা শিবিরের ছেলেরা কুয়েটের বহিষ্কৃত, অস্ত্র হাতে ভাইরাল হওয়া যুবদল নেতাকে প্রথমে গুলি করে এবং পরে পায়ের রগ কেটে হত্যা নিশ্চিত করেছে। ৮০-৯০ দশকে শিবিরের হলমার্ক ছিল রগ কাটা।" দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, "যা কিছু ঘটছে, সবই হলো নির্বাচনের পরে কী হবে তার প্রিকরসর বা নির্বাচন-পরবর্তী বাংলাদেশের ট্রেইলার।"
শিবিরের নোটিশের পর আজ বুধবার (১৬ জুলাই) অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমি একটা মিটিংয়ে আছি, এ বিষয়ে পরে কথা বলব।"
এর আগে গত শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে বাড়ির সামনে নিজের প্রাইভেটকার পরিষ্কার করার সময় মাহবুবকে মোটরসাইকেলে করে আসা তিন ব্যক্তি গুলি করে। মাহবুব গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে দেয়।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর এলাকায় বেপরোয়া আচরণ, দখল, জমি বিক্রির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণসহ নানা বিষয়ে নিহত মাহবুবুর রহমানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। একই সঙ্গে এক চরমপন্থি নেতার আত্মীয় হওয়ায় এলাকায় তার ব্যাপক প্রভাব ছিল। আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়ে। মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজির বিরোধেও একাধিক পক্ষের টার্গেটে পরিণত হন মাহবুব।