- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থপাচার ও ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দেশের ব্যাংক ও বাণিজ্যিক লেনদেনের মাধ্যমে প্রায় ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বা প্রায় ২২ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এই পাচারের বেশির ভাগই পণ্য আমদানির নামে খুলে দেওয়া এলসি ও রপ্তানির আড়ালে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করেছে এস আলম গ্রুপ। এরপর রয়েছে বেক্সিমকো, নাসা, বিসমিল্লাহ ও ক্রিসেন্ট গ্রুপ। এস আলম গ্রুপের ব্যাংকিং খাতের জালিয়াতিতে ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির প্রমাণ মিলেছে, যার মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এ কাজে ভুয়া এলসি এবং অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থার সহায়তা নেওয়া হয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপও জনতা ব্যাংকের ঋণ নিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। নাসা ও বিসমিল্লাহ গ্রুপও আমদানি-রপ্তানির আড়ালে বিপুল অর্থ বিদেশে স্থানান্তর করেছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতিগ্রস্ত সুবিধাবাদী পরিচালকদের জড়িত থাকার তথ্যও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, “যেসব ব্যক্তি দেশের অর্থ পাচার করেছে, তাদের অনেককেই চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে এখনো পাচারকৃত সম্পদ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি নেই। আদালতের মাধ্যমে শাস্তি না হলে এ টাকা ফেরানো কঠিন।”
প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায়, এলসি ও ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব, ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের অনুমোদন, ভুয়া কাগজপত্র এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে তহবিল স্থানান্তরের মতো নানা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এই বিশাল অর্থপাচার দেশের ব্যাংক খাত ও অর্থনীতির জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।