- ১২ জুলাই, ২০২৫
শিহাব মঈন / PNN কক্সবাজার: পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গাছ আমাদের অন্যতম প্রধান সহায়ক। অথচ সেই প্রকৃতিকেই ধ্বংস করা হচ্ছে 'মেরিন ড্রাইভ সড়ক' সম্প্রসারণ প্রকল্পের নামে। রাস্তার প্রস্থ বাড়ানোর জন্য নির্বিচারে কাটা হচ্ছে হাজার হাজার গাছ, যেগুলোর অনেকগুলোই বহু দশকের পুরোনো।
প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ফলদ, বনজ ও ফুলের গাছগুলো শুধু যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করত তা নয়—এগুলো সমুদ্র ও পাহাড়ঘেঁষা এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও আমাদের রক্ষা করত। অথচ এই গাছগুলো ধ্বংস করে ফেলায় এলাকায় দেখা দিয়েছে পাহাড়ধস ও সৈকতের পাড় ভেঙে পড়ার মতো বিপর্যয়।
এলাকাবাসী জানান, এর আগেও রাস্তার নির্মাণের সময় প্রচুর গাছ কাটা হয়েছিল, যার ক্ষতি এখনো পূরণ হয়নি। টেকনাফের শামলাপুর গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী গফুর চাচা বলেন, "প্রথম দফার ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতেই আবার গাছ কাটা শুরু হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণে ঝাউবন ও ফসলি জমিরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে কক্সবাজার তার প্রাকৃতিক পরিবেশ হারাবে।"
এই অবস্থা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পর্যটকরাও। তাঁদের ভাষায়, উন্নয়নের নামে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস করে কক্সবাজারের ট্যুরিজমও মার খাবে। গাছ না থাকলে বাঁচবে না প্রকৃতি, বাঁচবে না মানুষ।
পরিবেশবাদী কর্মীদের মতে, ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের দুই পাশে পরিকল্পনা ছাড়াই বৃক্ষ নিধন চলতে থাকলে তা হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ। দেশের জনসংখ্যার তুলনায় বৃক্ষের পরিমাণ আগেই অপ্রতুল; তাই বৃক্ষরোপণ না করে নির্বিচারে গাছ কাটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
পরিবেশ, বন, সড়ক ও সেতু এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের প্রতি এলাকাবাসী, পরিবেশকর্মী ও সাধারণ মানুষ অনুরোধ জানিয়েছেন—পরিবেশ রক্ষা করে উন্নয়ন করুন, প্রকৃতি ধ্বংস করে নয়।