- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘটিত নৃশংস হামলায় জড়িত থাকার দায়ে ছাত্রলীগের ৬৪ জন নেতাকে আজীবন বহিষ্কার এবং ছাত্রত্ব শেষ হওয়া ৭৩ জন সাবেক শিক্ষার্থীর সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাতে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভা শেষে আজ (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
ব্রিফিংয়ে উপাচার্য জানান, গত বছরের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ‘জুলাই আন্দোলন’-এ শিক্ষকদের ওপর বর্বরোচিত হামলায় জড়িত ছিলেন মোট ২২৯ জন। এদের মধ্যে ১৩০ জন বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ৯৯ জন সাবেক শিক্ষার্থী।
বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে:
৬৪ জনকে আজীবনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
৩৭ জনকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
৮ জনকে ১ বছরের জন্য এবং ১ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
২০ জনকে তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে:
৭৩ জনের ডিগ্রিসনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে।
৬ জনের সনদ ২ বছরের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
২০ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উপাচার্য আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কেউই অপরাধ করে পার পাবে না। বিচার হবে ন্যায়ের ভিত্তিতে এবং প্রমাণসাপেক্ষে।”
তিনি বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসী ও হামলার পরিকল্পনায় যারা যুক্ত ছিলেন, এবং হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ওঠা প্রশ্নের কারণেও পুরো তদন্ত প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত এবং তাদের সনদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে এবার গৃহীত হলো চূড়ান্ত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ।
বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, “বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভাঙার শুরু হলো এখান থেকে।”