Friday, December 5, 2025

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকার অভিযোগে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত


ফাইল ছবিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সংগৃহীত)

PNN নিউজ ডেস্ক | কুষ্টিয়া:

জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের বিরোধীতাকারী হিসেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন ১৯ জন শিক্ষক এবং ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। একই সঙ্গে একই অভিযোগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রশাসন জানিয়েছে, বরখাস্তকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি শাস্তি নির্ধারণ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ’র তত্ত্বাবধানে কাজ করবে।

এই সিদ্ধান্তের আগে, গত ১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। কমিটিকে আহ্বায়ক করা হয় আল হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনকে। তদন্তে প্রত্যক্ষদর্শী ও লিখিত অভিযোগ, ভিডিও, তথ্যচিত্র এবং সংবাদপত্রের খবরের ভিত্তিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানবিরোধী কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া যায়।

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষকরা হলেন, ট্রিপল ই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাশিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লু, সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল, অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জয়শ্রী সেন, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান।

সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছেন, প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার আলমগীর হোসেন খান, আব্দুল হান্নান, ইব্রাহীম হোসেন সোনা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট, একই দপ্তরের আব্দুস সালাম সেলিম, মাসুদুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের উকীল উদ্দিন, ফার্মেসি বিভাগের জাহাঙ্গীর আলম শিমুল, আইসিটি সেলের জে এম ইলিয়াস, অর্থ ও হিসাব বিভাগের তোফাজ্জেল হোসেন এবং জনসংযোগ দপ্তরের আবু সিদ্দিক রোকন।

তদুপরি, ৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পড়াশোনা শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল এবং অধ্যয়নরতদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মার্কেটিং, ইংরেজি, বাংলা, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, আইন, আরবী ভাষা ও সাহিত্য, সমাজকল্যান এবং চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা রয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামী দিনে এই বরখাস্ত ও বহিষ্কারকৃত ব্যক্তিদের চূড়ান্ত শাস্তি এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া নির্ধারণের জন্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও তদন্ত চালাবে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন