- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, গত ১১ মাসে সারা দেশে পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে ৭৬১টি মামলা। এসব মামলায় ১,১৬৮ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬১ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ সোমবার রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন–পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এসব তথ্য জানায় টিআইবি।
টিআইবির ফেলো শাহজাদা এম আকরাম বলেন, “গণ–অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র–জনতার ওপর হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্য, হত্যার নির্দেশদাতা ও ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে দেশে একযোগে মামলা হয়েছে।” তিনি জানান, গত এক বছরে মোট ১,৬০২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৩৮টি হত্যা মামলা। এসব মামলায় পতিত সরকারের প্রায় ৮৭ জন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন।
শাহজাদা এম আকরাম আরও জানান, “প্রায় ৭০ শতাংশ মামলার তদন্তে সন্তোষজনক অগ্রগতি রয়েছে এবং ৬০-৭০টি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।”
এছাড়া গণ–অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত ৪২৯টি অভিযোগ জমা পড়েছে এবং ২৭টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলায় ২০৬ জন আসামির মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
টিআইবি জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠিত হয়েছে, এবং ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়েছে।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় (১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪) যেসব হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছিল, সেগুলো প্রায় পুরোটাই প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও জানান টিআইবির ফেলো।
তবে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজে ধীরগতি রয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে টিআইবি। সংস্থাটি মনে করে, সময়মতো বিচার সম্পন্ন না হলে ন্যায়বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে এবং ভুক্তভোগীদের আস্থা হারাতে পারে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ফেলো মো. জুলকারনাইন, গবেষক ফারহানা রহমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।