Friday, December 5, 2025

এইচএসসি পাসের হার কম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল সংখ্যক আসন শূন্য থাকার শঙ্কা


ছবিঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (সংগৃহীত)

PNN নিউজ ডেস্ক | ঢাকা:

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার গত ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হওয়ায়, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল সংখ্যক আসন শূন্য থাকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তবে এই সংখ্যা কম হওয়ায়, অনেক কলেজ এবং পিছিয়ে পড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এককেও শিক্ষার্থী পেতে না-ও পারে বলে শঙ্কা উঠেছে।

এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, যার মধ্যে ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এছাড়া, ১ লাখ ৫৯ হাজার শিক্ষার্থী জিপিএ-৪ এবং ১ লাখ ৩৯ হাজার শিক্ষার্থী জিপিএ-৩.৫ পেয়েছেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর মোট আসন সংখ্যা ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৯৫টি হলেও, গত ২০২৩-২৪ সেশনে ৭ লাখ ৪ হাজার ১৯৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। আসন শূন্য ছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ৩৪৯টি। শিক্ষাবিদরা জানাচ্ছেন, এবারের ফলাফল অনুযায়ী, যদি সব শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায়, তবুও ৩ লাখের বেশি আসন ফাঁকা থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ডিসেম্বরেই ভর্তি নেবে। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী দুটি সিদ্ধান্তে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, যা তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এ বিষয়ে সাবিকুন্নাহার ফারিহা, একজন শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, "আমরা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছি, কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য এখন আমাদের মধ্যে দোটানা চলছে। এভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হলে আমাদের পরিবারের জন্য আর্থিক চাপ বেড়ে যাচ্ছে।"

এছাড়া, শিক্ষাবিদরা বলছেন, "জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই আসন বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন ফাঁকা থাকে।"

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, "এ বছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় ভর্তি-যোগ্য শিক্ষার্থীও কমে যাবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম ও আর্থিক অবস্থায়।"

তিনি আরও বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সরকারি বাজেট বা স্বতন্ত্র রাজস্ব উৎস নেই, ফলে শিক্ষার্থীভিত্তিক ফি থেকে যে রাজস্ব আসে, তার ওপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যয়, পরীক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা চালানো হয়। কিন্তু এবার শিক্ষার্থী কমে গেলে রাজস্ব আয়ও কমবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।"

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সঠিক পরিকল্পনা ও আসন পুনর্বিন্যাসের পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা, যাতে ভবিষ্যতে এমন সমস্যা না হয়।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন