- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আজ বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে একদল ব্যক্তি অবরুদ্ধ করে রাখেন। নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে আসা ওই দল স্লোগান দিয়ে আলোচনা সভা ভণ্ডুল করে দেয়।
‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করেছিল ‘মঞ্চ ৭১’। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ড. কামাল হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। সকাল ১০টায় আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পরিস্থিতির কারণে তা প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্বে শুরু হয়।
আলোচনায় প্রথম বক্তৃতা দেন অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দেশের সংবিধানকে ভিন্নমুখী করার চেষ্টা চলছে, যার পেছনে জামায়াত–শিবির ও কিছু রাজনৈতিক শক্তি সক্রিয়। বক্তব্য শেষ হতেই মিছিল সহকারে ‘জুলাই যোদ্ধারা’ মিলনায়তনে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ব্যানার ছিঁড়ে অংশগ্রহণকারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লতিফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক হাফিজুর রহমানসহ অন্তত ১৫ জনকে তাদের হেফাজতে নেয়। পরে তাঁদের পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “আমি শুধু আমন্ত্রণ পেয়ে এখানে এসেছিলাম। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এমন ঘটনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।”
অপরদিকে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ পক্ষ থেকে আল আমিন রাসেল নামের একজন দাবি করেন, “এখানে পতিত আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। আমরা সেটি কোনোভাবেই মেনে নেব না।”
পল্টন থানা জামায়াতের নেতা শামীম হোসাইনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই গোলটেবিলে অংশ নেওয়া অনেকেই “চব্বিশের ঘটনার খুনের সঙ্গে জড়িত।” তাই তারা আইন নিজের হাতে না নিয়ে পুলিশের কাছে তাঁদের তুলে দিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, লতিফ সিদ্দিকীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা বা অন্য কোনো পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
দিনের শেষ ভাগে জানা যায়, শাহবাগ থানার ওসির বরাতে তাঁদের গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।