- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদার বড় একটি অংশ মেটায় কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত বিভিন্ন হোটেল ও খাবারের দোকানগুলো। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, এসব স্থানে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে নিম্নমানের খাবার চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বহুবার অভিযোগ দেওয়া হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
দক্ষিণ হলের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহি বলেন, ‘খাবার খাওয়া হয় শরীর ও মন চাঙা রাখার জন্য। কিন্তু এখানে যেসব খাবার পরিবেশন করা হয়, তা যেন শরীরের জন্য বিষ। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই, খাবার খোলা অবস্থায় রাখা হয়। ডায়রিয়া, পেটব্যথা আর ফুড পয়জনিং এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বাধ্য হয়ে আমরা এসব খাবার খাচ্ছি, যা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।’
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, খাবারের মান এবং দাম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তারা হতাশ। তারা বলছেন, মানহীন খাবার খাওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে অতিরিক্ত দামও গুনতে হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও কলেজ প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তাদের মতে, প্রশাসনের নজরদারির অভাবে হোটেল ও দোকানমালিকরা লাগামহীনভাবে অনিয়ম করছে—যা শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগকে দীর্ঘস্থায়ী করে তুলেছে। শিক্ষার্থীদের খেতে দেওয়া হচ্ছে খোলা লাইনের পানি, যা রাখা হচ্ছে পুরনো ও নোংরা প্লাস্টিক বোতলে। পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করে বানানো হচ্ছে সিংগারা, পুরি, মাছ-মাংসসহ অন্যান্য ভাজা খাবার। রান্নার পরিবেশ অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন, ব্যবহার করা হচ্ছে কালো ও অপরিষ্কৃত হাঁড়ি-পাতিল।
তবে আশ্চর্যজনকভাবে, এসব নিম্নমানের খাবারের দাম রাখা হচ্ছে প্রায় বাইরের রেস্টুরেন্টের সমপর্যায়ের। খাবার পরিবেশনের প্লেটগুলোও ভালোভাবে ধোয়া না হয়ে শুধু হালকা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইলিয়াস হলের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান বলেন, ‘খাবারের দাম আকাশছোঁয়া, কিন্তু মান এতটাই খারাপ যে মুখে তোলার আগ্রহও জাগে না। বাইরের হোটেলেও একই দামে ভালো মানের খাবার মেলে। মাঝে মাঝে পচা সবজি দিয়েও রান্না করা হয়।’
উত্তর ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিকল্প না থাকায় আমাদের বাধ্য হয়ে এখানেই খেতে হচ্ছে। কিন্তু যেভাবে এখানে খাবার তৈরি ও পরিবেশন করা হয়, তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।’