- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
চলতি মাসে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় কটূক্তি ও অবমাননার ঘটনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল তার নিজ ক্যাম্পাসে পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত হয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। একই ধরনের ঘটনায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মোনসের আলীকেও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকেও চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি দুইজনের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যা পর্যালোচনা করে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগও এসেছে।
এদিকে, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বহিষ্কার দাবি করা হয়েছে। এছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধর্ম অবমাননার বিষয়েও বিভিন্ন অভিযোগ এবং প্রতিক্রিয়ার ঘটনা লক্ষ্য করা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, এ ধরনের অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করা হয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, শিক্ষার্থীদের সতর্ক করতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার্তা দেওয়া হবে।
ইসলামিক স্কলার ও শিক্ষাবিদরা এ ধরনের ঘটনার পেছনে শিক্ষা কারিকুলাম, ধর্মীয় জ্ঞানহীনতা এবং কিছু অংশে ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবকে দায়ী করছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সাম্প্রতিক ১৫ বছরের শাসনামলে ইসলামোফোবিয়ার ছড়ানো একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, ঐতিহাসিকভাবে এ অঞ্চলের মানুষ সব ধর্মকে সম্মান করে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিপদগামী বিষয়গুলোকে নস্যাৎ করছে, যা সামাজিক অবক্ষয়ের লক্ষণ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এ ধরনের ধর্মীয় কটূক্তি ও অবমাননার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে।