- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
গত পৌনে দুই বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ক্রমেই কমছে। কানাডা ও ইউরোপের প্রধান নয়টি বাজারেও রপ্তানি আয় প্রায় ৮.৭৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের মতো নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়ায় সামগ্রিকভাবে পোশাক খাতের রপ্তানি আয় কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ওঠানামা করেছে। বিশেষ করে এপিল-জুন প্রান্তিকে রপ্তানি ১৭৩ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য কম।
তবে ভবিষ্যতে মার্কিন প্রশাসনের অতিরিক্ত শুল্ক প্রণালী যদি অব্যাহত থাকে, তবুও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর ওপরও প্রায় সমপরিমাণ শুল্ক আরোপিত রয়েছে। ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হলেও ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা ও কম্বোডিয়ার মতো অন্যান্য দেশের শুল্ক প্রায় ১৯ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে হলেও জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, কানাডা ও বেলজিয়ামে রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি জাপান, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের নতুন বাজারেও রপ্তানি বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক দিক।
তবে প্রতিবেদনটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির পরিবর্তন বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়াতে পারে। এছাড়া, ভারত সরকারের স্থলপথে রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ ও উৎপাদন খরচ কমিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার প্রস্তুতি নিতে হবে।
সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন নীতিসহায়তার মাধ্যমে রপ্তানি খাতকে সহযোগিতা প্রদান করছে যাতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার রক্ষা ও সম্প্রসারণ নিশ্চিত করা যায়।
এ পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করছে বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি ও সরকারি সহায়তার ওপর।