- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্ট: PNN, আসিফ মাহমুদ
নতুন বছর শুরুর আগেই মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর দিলো সরকার। বৈধভাবে আমদানিকৃত স্মার্টফোনের দাম কমাতে আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্কহার প্রায় ৬১ শতাংশ; এটি কমাতে সরকার ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সভাপতিত্বে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভায় মোবাইল আমদানি শুল্ক কমানোসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বিদেশফেরত প্রবাসীরা দেশে এসে ৬০ দিন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এর বেশি সময় থাকলে ফোন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
বিএমইটি (BMET) রেজিস্ট্রেশন কার্ডধারী প্রবাসীরা মোট তিনটি ফোন আনতে পারবেন নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটসহ অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন ট্যাক্স ছাড়া। চতুর্থটির ক্ষেত্রে ট্যাক্স দিতে হবে।
যাদের বিএমইটি কার্ড নেই তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ট্যাক্স ছাড়াই আনতে পারবেন।
মন্ত্রণালয় সতর্ক করে জানিয়েছে, বিদেশি বিমানবন্দরে চোরাচালানি চক্র সাধারণ প্রবাসীদের চাপ প্রয়োগ করে অবৈধভাবে স্বর্ণ বা দামি ফোন বহন করায়। এ কারণে নতুন ফোন আনার ক্ষেত্রে বৈধ ক্রয়কাগজ সঙ্গে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈধ পথে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাসের ফলে বাজারে স্মার্টফোনের দাম কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, শুল্ক কমালে দেশের ১৩–১৪টি মোবাইল উৎপাদন কারখানার শুল্ক-ভ্যাটও সমন্বয় করতে হবে। নইলে বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এজন্য আমদানি ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন শুল্ক একীভূত করার বিষয়ে বিটিআরসি, এনবিআর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একাধিক বৈঠক করেছে এবং দ্রুততার সাথে কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে নাগরিকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে আপনার অজান্তে কেউ আপনার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কি না, তা নিয়মিতভাবে যাচাই করুন। কারণ অনলাইন স্ক্যামিং, জুয়া, সাইবার অপরাধ বা মোবাইল ব্যাংকিং–সংক্রান্ত অপরাধে আপনার সিম ব্যবহৃত হলে ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। এজন্য সবসময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুরোনো ফোনের ডাম্পিং এবং কেসিং পরিবর্তন করে ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে ঢোকানোর প্রচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে। ভারত, চীন, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ফ্লাইট পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং শিগগিরই কাস্টমস থেকে অভিযান শুরু হবে।
সরকার আশা করছে, এসব সিদ্ধান্ত বৈধ আমদানিকে উৎসাহিত করবে, স্মার্টফোনের বাজারকে স্থিতিশীল করবে এবং ডিভাইস ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি টেকসই পরিবেশ তৈরি করবে।