- ২৫ অক্টোবর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক | চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের পর, দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউজে কড়া নিরাপত্তা তৎপরতা শুরু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষ নিরাপত্তা টিম চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি)-এর সমন্বয়ে গঠিত ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে এই পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করে। পরিদর্শন শেষে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক পর্যালোচনা নিয়ে বন্দর কর্মকর্তাদের সাথে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিভাগীয় প্রধান এবং কাস্টমস কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এতে গুরুত্বারোপ করা হয় বন্দর এলাকার স্পর্শকাতর স্থানে নজরদারি জোরদার, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি বৃদ্ধি, প্রবেশগেটের নিরাপত্তা স্ক্যানিং আরও কঠোর করা এবং নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করার ওপর। নিরাপত্তা টিম জানায়, বন্দরে কোনো ধরনের নাশকতা, অগ্নিসংযোগ বা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। এ উদ্দেশ্যে, বন্দর এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম বলেন, "বন্দরের নিরাপত্তায় জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সব সংস্থা একযোগে কাজ করছে।"
বর্তমানে, চট্টগ্রাম বন্দর নিরাপত্তা কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, আনসার এবং বন্দর নিরাপত্তা কর্মীরা নিয়োজিত আছেন। বিশেষ করে, বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল, নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত হওয়ায়, সেখানে নৌবাহিনীর উপস্থিতি ও টহল কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন নৌবাহিনীর স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের মোট আমদানি-রপ্তানির ৯০ শতাংশ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ কারণে বন্দরের নিরাপত্তা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয় নয়, বরং এটি দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। সরকারের জন্য বন্দর ও কাস্টম হাউজ দুটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং এসব স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।