Monday, October 27, 2025

চীনকে শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিয়ে ট্রাম্পের এশিয়া সফর শুরু; পুসানে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আজ


ছবিঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর এশিয়ায় তার প্রথম সফরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। (সংগৃহীত। আল জাজিরা । এন্ড্রু কাবায়েরো-রেইনোল্ডস/এএফপি)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN 

মালয়েশিয়া সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যেটি তার পাঁচ দিনের এশীয় সফরের প্রথম অংশ। এই সফরটি জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বিস্তৃত, যা জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তার আক্রমণাত্মক বাণিজ্য শুল্ক নীতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

শনিবার, কুয়ালালামপুরে আঞ্চলিক জাতিসংঘের (ASEAN) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে, মার্কিন ও চীনা শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা আলোচনায় বসেন। এই আলোচনা চলমান বাণিজ্য সংঘাতের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে, কারণ ট্রাম্প সম্প্রতি চীনা পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, এবং চীনও কিছু রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট ও খনিজ উপাদানের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে।

এই আলোচনা মূলত একটি উচ্চাভিলাষী বৈঠকের পথ তৈরি করবে, যেখানে ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার পুসানে অনুষ্ঠিত এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (APEC) সম্মেলনে মিলিত হবেন। এই বৈঠকটি শুল্ক, প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ ও চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সয়া বিনের ক্রয় নিয়ে কিছু চুক্তি আনতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

রবিবার সকালে, ট্রাম্প তার সবচেয়ে দীর্ঘ বিদেশ সফরে মালয়েশিয়া পৌঁছাবেন। হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে একটি "ভাল বৈঠক" হবে বলে আশাবাদী। "আমাদের প্রেসিডেন্ট শি-র সঙ্গে অনেক আলোচনা করার বিষয় আছে, এবং তারও আমাদের সাথে অনেক কিছু আলোচনা করার আছে," তিনি বলেন।

শুক্রবার, ট্রাম্প জানিয়েছিলেন যে, তিনি যদি চীনের সঙ্গে কোনো চুক্তি না করতে পারেন, তবে নভেম্বর ১ তারিখ থেকে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে মোট ১৫৫ শতাংশ করতে পারেন। এটি সম্ভবত চীন থেকে প্রতিক্রিয়া আনবে এবং আগের মেল-মিলনের এক ধরনের বিরতি শেষ হবে।

এই বৈঠকের বাইরে, ট্রাম্প এবং শি এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, যেমন তাইওয়ান, যা দীর্ঘদিন ধরে একটি বিরোধের বিষয়, এবং রাশিয়া, যা এখন ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে।

এছাড়া, ট্রাম্প বলেন, তিনি সম্ভবত জিমি লাইয়ের মুক্তি ইস্যুটিও উত্থাপন করবেন। লাই হলেন হংকংয়ের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গণতন্ত্রপন্থী সংবাদপত্র অ্যাপল ডেইলির প্রতিষ্ঠাতা, যিনি বর্তমানে চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে, ট্রাম্পের এশিয়া সফরের আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার হাজার হাজার প্রতিবাদকারী তার শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের জন্য চাপ দেওয়ার প্রতিবাদে সিউলের কেন্দ্রে সমাবেশ করছেন।

২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ASEAN সম্মেলন বর্জন করার পর, ট্রাম্প এবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলনে দ্বিতীয়বারের মতো অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন। এই সম্মেলনে আরো কিছু উচ্চ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থাকবেন, যেমন জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।

এ বছর, মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত সংঘাতের বিষয়ে কাজ করছে, যা জুলাই মাসে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। রবিবার, ট্রাম্প মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার ইব্রাহিমের সাথে বৈঠক করবেন, যিনি থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া শান্তিচুক্তির আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক নতুন যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে, যা থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সংঘাতের অবসান ঘটাতে সাহায্য করবে।

এছাড়া, ট্রাম্পের ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলার সাথে বৈঠকও হতে পারে, যেখানে লুলা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রাজিলের আমদানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক কাটানোর জন্য প্রস্তাব করবেন।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন