- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক | চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের সাতদিন পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী এখনও ভাড়া বাসায় ফেরেননি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে আগামী রবিবার থেকে নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র সাত হাজারের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি ২১ হাজার শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস সংলগ্ন গ্রাম বা চট্টগ্রাম শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন। বিশেষ করে ১ নম্বর গেট, দক্ষিণ ক্যাম্পাস, কটেজ, ফহেপুর ও জোবরা গ্রামে ভাড়া বাসা করে থাকেন অনেকে। মাসিক ১ থেকে ২ হাজার টাকায় এসব বাসা শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ভরযোগ্য আবাসনের মতো পরিচিত।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন আহমেদ বলেন, “সংঘর্ষের পর আমি বাসায় যেতে সাহস পাচ্ছি না। এখনও এলাকা নিরাপদ নয়। প্রশাসন উদ্যোগ না নিয়ে আবারও ক্লাস-পরীক্ষা চালু করেছে। আমাদের বই-খাতাসহ অনেক জিনিসপত্র বাসায় রয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে একটি বন্ধুর সঙ্গে থাকতে হচ্ছে।”
সংঘর্ষে আহত তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “২ নম্বর গেট ও জোবরা এলাকায় শিক্ষার্থীরা নিরাপদ বোধ করছে না। স্থানীয় নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার কারণে এখনো নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি।”
এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, সংঘর্ষের সময় ফেসবুক লাইভ করার কারণে এক ছাত্রীকে অকথ্য ভাষা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের পূর্বের সম্পর্ক ভালো ছিল, কিন্তু এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি। বাসা ও কটেজ মালিকদের সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত হটলাইন সার্ভিস চালু করা হবে এবং সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের কাজ চলছে। গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
গত শনিবার রাতে ২ নম্বর গেট এলাকায় একজন ছাত্রী ভাড়া বাসায় ঢুকতে চাইলে দারোয়ান তাকে মারধর করেন। প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে, এরপর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে। এতে উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ অন্তত ৪২১ জন আহত হন। এখনও দুই শিক্ষার্থীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে।