- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ৩০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আখতার হোসেন এ তথ্য জানান।
দুদক জানায়, ২০১৩ সালে ‘মেসার্স ফোর এস স্টিল’ নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান বেসিক ব্যাংকের গুলশান শাখায় একটি হিসাব খুলে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ৫০ কোটি টাকার ঋণ আবেদন করে। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটিকে ৩০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়, যা ব্যাংকের নীতিমালা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করে।
ঋণ আবেদনকারী মো. মাসুদ রানা বাড্ডা মৌজার ১৮.১৫ কাঠা জমির কাগজপত্র জামানত হিসেবে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। যদিও ব্যাংকের ক্রেডিট কমিটি ঋণের বিপক্ষে মত দিয়েছিল, শাখা ব্যবস্থাপক শিপার আহমেদ সেটি উপেক্ষা করে ঋণ প্রস্তাব প্রধান কার্যালয়ে পাঠান।
এরপর ব্যাংকের তৎকালীন এমডি কাজী ফখরুল ইসলাম ২০২৩ সালের ১০ জুন পরিচালনা পর্ষদের ৩২৩তম সভায় ঋণ প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও নয়জন পরিচালক। তারা শর্তসাপেক্ষে ৩০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দেন।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের নীতিমালা ও সুশাসনের মারাত্মক লঙ্ঘন হয়েছে। এ কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু – সাবেক চেয়ারম্যান
কাজী ফখরুল ইসলাম – সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক
শুভাশিষ বোস – সাবেক পরিচালক
শ্যাম সুন্দর সিকদার – সাবেক পরিচালক
নিলুফার আহমেদ – সাবেক পরিচালক
কামরুন নাহার আহমেদ – সাবেক পরিচালক
এ কে এম রেজাউর রহমান – সাবেক পরিচালক
এ কে এম কামরুল ইসলাম (এফসিএ) – সাবেক পরিচালক
মো. আনোয়ারুল ইসলাম (এফসিএমএ) – সাবেক পরিচালক
আনিস আহমেদ – সাবেক পরিচালক
মো. শাহ আলম ভুঞা – কোম্পানি সচিব
শিপার আহমেদ – জেনারেল ম্যানেজার ও শাখা ব্যবস্থাপক
ওমর ফারুক – উপ-মহাব্যবস্থাপক
এস এম জাহিদ হাসান – ক্রেডিট ইনচার্জ
মো. মাসুদ রানা – প্রোপ্রাইটর, ফোর এস স্টিল
কামাল হোসেন সেলিম – সাধারণ গ্রাহক
সাহিদা আক্তার শিমু – কামাল সেলিমের স্ত্রী
দুদক মহাপরিচালক আরও জানান, বেসিক ব্যাংকের অন্যান্য অনিয়ম সম্পর্কেও তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে আরও মামলা করা হবে।