Tuesday, October 14, 2025

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বিরোধী প্রতীকী প্রতিবাদ, উত্তপ্ত প্রতিক্রিয়া ছাত্রদলের


ছবিঃ রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধের দাবিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রক্টরের কার্যালয়ে প্রতীকী আন্দোলনের অংশ হিসেবে শাড়ি ও চুড়ি রেখে দেন। (সংগৃহীত)

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। প্রশাসনের বিরুদ্ধে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের একাংশ রবিবার বিকেলে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার দপ্তরে ‘শাড়ি ও চুড়ি’ রেখে প্রতিবাদ জানান। শিক্ষার্থীদের এই প্রতীকী কর্মসূচিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নারীবিদ্বেষী আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেটে একদল শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তাঁরা শাড়ি ও চুড়ি নিয়ে প্রক্টর ও ছাত্র পরামর্শ নির্দেশনা দপ্তরে ঢুকে চেয়ার ও টেবিলে রেখে আসেন। সেই সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক শামসুর রহমান জানান, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। এরপরও শিবিরের কমিটি ঘোষণা ও ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণের ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা এই প্রতীকী প্রতিবাদে অংশ নেয়।

আরেক শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও তা মানা হচ্ছে না। প্রশাসনের ব্যর্থতায়ই এমন পরিস্থিতি।’

অন্যদিকে, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদকে নারীর প্রতি অবমাননাকর হিসেবে আখ্যায়িত করে তাৎক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন অভিযোগ করেন, কিছু শিক্ষার্থী প্রশাসনের মদদে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে চাইছে এবং ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করছে।

বিক্ষোভ শেষে ছাত্রদলের নেতারা উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এবং সোমবার দুপুর পর্যন্ত আলটিমেটাম দেন।

এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি জরুরি নোটিশ প্রকাশ করে পুনরায় ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়। উপাচার্য শওকাত আলী জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্ররাজনীতির মধ্যে চলমান উত্তেজনা ঘিরে শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্বেগ বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন শিক্ষার্থীরা।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন