- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের জেরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে চাপে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, বিষয়টিকে সহজভাবে নিয়ে সরকারের ভেতরে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস এবং ‘অতি আত্মবিশ্বাস’ কাজ করেছিল। এখন সেটারই মূল্য দিতে হচ্ছে।
রোববার (২০ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সরকার ভেবেছিল আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা যাবে এবং সেটি নিয়ে কৃতিত্বও নেওয়ার মানসিকতা ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক দর-কষাকষির বাস্তবতা ভিন্ন। এখন আমরা বুঝতে পারছি, কতটা প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো শুল্ক আলোচনায় কী অবস্থানে আছে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। শুল্কের বাইরে অশুল্ক বাধা, ভূরাজনৈতিক কৌশল, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দিকগুলোও হিসাবের মধ্যে আনতে হবে।”
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রসঙ্গ টেনে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের বড় পোশাক সরবরাহকারী। একদিনে এ বাজার থেকে সরে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে বাড়তি শুল্ক চাপ কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে উদ্যোক্তা ও ক্রেতাদের মধ্যে দর-কষাকষির সুযোগ রয়েছে।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বাজার ধরে রাখা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতসহ অনেক দেশ এই সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে আছে। তাই আমাদের কৌশল আরও শক্তিশালী করতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “শুল্ক আরোপের বিষয়টি এসেছে ট্রাম্প প্রশাসনের সময়। এখন দেখা দরকার, এটি কতদিন বহাল থাকবে। ইউএসটিআর ছাড়াও মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করছে—এই বিষয়টি আমাদের ভালোভাবে বুঝতে হবে। সেখানে লবিস্ট নিয়োগ এবং কৌশলগত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।”
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। সকলে মিলেই এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে রপ্তানি বাজার রক্ষা করতে পারে—সেটি নিয়ে নানা মত দেন।