Friday, December 5, 2025

বাংলাদেশ–ভুটান ট্রানজিট চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু, রওনা হলো প্রথম কনটেইনার


ফাইল ছবিঃ চট্টগ্রাম বন্দরের (সংগৃহীত)

স্টাফ রিপোর্ট: PNN 

বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে ভুটানের ট্রানজিট চালান বুড়িমারী স্থলবন্দরে পৌঁছানোর জন্য রওনা হয়েছে। চালানটি সড়কপথে প্রায় ৬৮৪ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের ফুয়েন্টশোলিং স্থলবন্দর পৌঁছাবে।

চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস ও সিঅ্যান্ডএফ সূত্র জানায়, বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনার বহনকারী ট্রেইলারটি বুড়িমারীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কনটেইনারটির নিরাপত্তার জন্য বিশেষ এসকর্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কাস্টম হাউস চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার এইচএম কবির বলেন, “চালানটির শুল্কায়ন ও ফি পরিশোধ কার্যক্রম মঙ্গলবার সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের দেশের ভাবমূর্তি, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও দক্ষতা এই চালান নিয়ে জড়িত, তাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ সই হওয়া ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট’ চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে প্রায় দুই মাস আগে। ভুটানের পরীক্ষামূলক চালানটি ‘এমভি এইচআর হিরা’ জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কেজি পণ্য, যার মধ্যে শ্যাম্পু, শুকনো পাম ফল, আইস টি, চকলেট ও অরেঞ্জ জুস রয়েছে।

চালানটির রপ্তানিকারক থাইল্যান্ডের অ্যাবিট ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড এবং আমদানিকারক ভুটানের এবিট ট্রেডিং। খালাসের দায়িত্বে ছিল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এনএম ট্রেডিং করপোরেশন।

এনএম ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদুল আলম খান বলেন, “প্রথম চালান হওয়ায় কিছু ধাপে সময় লেগেছে, কিন্তু অবশেষে চালানটি সাফল্যের সঙ্গে বুড়িমারী স্থলবন্দরে পৌঁছানোর জন্য রওনা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় এটি সম্ভব হয়েছে।”

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, “চট্টগ্রাম বন্দর ট্রানজিট সেবা দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। পর্যাপ্ত ইয়ার্ড, বার্থ ও টার্মিনাল রয়েছে এবং কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যত বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে, তত বেশি বন্দরের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।”

গত ১০ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ২৮ লাখ ৪৯ হাজার ৫৪২ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১১ কোটি ৫০ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ মেট্রিক টন এবং ৩ হাজার ৫৫২টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ও কার্যকারিতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই ট্রানজিট চালান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনার দিক উন্মোচন করেছে এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন