Tuesday, October 21, 2025

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের ৭ দফা দাবি: খামার বন্ধের হুঁশিয়ারি


ছবিঃ মুরগি ও ডিম (সংগৃহীত)

স্টাফ রিপোর্টার | PNN: 

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) অযৌক্তিকভাবে ফিড, মুরগির বাচ্চা এবং মেডিসিনের দাম বৃদ্ধি করার প্রতিবাদে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের দাবিগুলো মেনে না নিলে ১ নভেম্বর থেকে সারাদেশের প্রান্তিক খামারিরা পর্যায়ক্রমে তাদের খামার বন্ধ করবে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বিপিএর নেতা সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, "সরকার যদি আমাদের ৭ দফা দাবি মেনে না নেয়, তবে আমাদের প্রান্তিক খামারিরা বাধ্য হয়ে খামার বন্ধ রাখবে এবং ডিম-মুরগির উৎপাদন স্থগিত করবে।"

সুমন হাওলাদার আরও বলেন, "বাংলাদেশে ডিম ও মুরগির ৮০ শতাংশ উৎপাদন করে আমাদের প্রান্তিক খামারিরা। কিন্তু এই খাতের সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের কোন অংশগ্রহণ নেই। কিছু কোম্পানির সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের খামারিদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে বহু খামারি ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।"

তিনি অভিযোগ করেন, "ভারতে ১টি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায় এবং মুরগি ৮০-৯০ টাকায়। অথচ বাংলাদেশে তা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা এবং ১৫০-১৬৫ টাকায়। এই ব্যবধানের জন্য দায়ী কর্পোরেট সিন্ডিকেট এবং সরকারের নজরদারির অভাব।"

বিপিএর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ২০২৩ সালে ট্রেড অ্যান্ড ট্র্যারিফ কমিশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি কেজি ফিডের দাম ১৫-২০ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। এই অতিরিক্ত দাম পরিশোধ করতে গিয়ে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অথচ তারা ১৩০-১৪০ টাকায় মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সংগঠনটি আরও জানায়, সরকার যখন ডিম বা মুরগির দাম বৃদ্ধি পায়, তখন আলোচনা শুরু হয় এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়, কিন্তু ফিড বা মুরগির বাচ্চার দাম বাড়লে কোনো পদক্ষেপ নেয় না।

সংবাদ সম্মেলনে বিপিএর সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার লিখিতভাবে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলি হলো:

১. কর্পোরেট সিন্ডিকেট ভেঙে ফিড, মুরগির বাচ্চা, মেডিসিন/ভ্যাকসিনের দাম সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে।

২. অবিলম্বে কর্পোরেট প্রবাবমুক্ত, ন্যায্য ও স্বচ্ছ বাজার ব্যবস্থাপনা গড়তে হবে।

৩. প্রান্তিক খামারিদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪. ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের বাজারে নিয়মিত অডিট ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৫. উৎপাদন খরচ অনুযায়ী ১০ শতাংশ লাভ যোগ করে ডিম ও মুরগির ন্যায্য দাম নির্ধারণ করতে হবে।

৬. ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা, সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ ও ভর্তুকি দিতে হবে।

৭. দুর্নীতিগ্রস্ত ও কর্পোরেটপন্থি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিপিএর নেতারা তাদের দাবি মেনে না নিলে দেশের পোলট্রি খাত আরও সংকটে পড়বে বলে জানিয়েছেন।


Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন