- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
সরকার দেশের ২৬০টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম স্থির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে এই ওষুধগুলো সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) টাস্কফোর্সের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ওষুধের তালিকা হালনাগাদ, যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ এবং উৎপাদকদের জন্য ন্যায্য মুনাফা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এর আগে বিভিন্ন সময়ে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হলেও তা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তাই এবার একটি শক্তিশালী জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যার প্রধানের পদ হবে মন্ত্রী সমমানের।
সরকার এই প্রক্রিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইউনিসেফকে যুক্ত করেছে। তবে টাস্কফোর্সে ওষুধ উৎপাদনকারীদের প্রতিনিধি রাখা হয়নি। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব ও ডেল্টা ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “ওষুধ উৎপাদনকারীদের অংশ না রাখলে চিকিৎসক, রোগী ও প্রস্তুতকারক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মূল্য নির্ধারণের সময় কাঁচামাল ব্যয় ছাড়াও গবেষণা, মান নিয়ন্ত্রণ ও আধুনিকায়নের খরচ বিবেচনা করতে হবে।”
গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে প্রতি ১০০ টাকার মধ্যে ৪৪ টাকা ব্যয় হয় শুধু ওষুধে। বৈশ্বিক গড় ১৫ শতাংশ। ২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, ওষুধের উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন।
২০১৬ সালে ২৮৬টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা করা হয়েছিল। সেই সময় মাত্র ১১৭টির দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে প্রতিবছর হালনাগাদ করার কথা থাকলেও গত ৯ বছরে কার্যকর তদারকি হয়নি।
রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং সরকারের রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন—বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ এপিআই অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের দুজন প্রতিনিধি।