Friday, December 5, 2025

তারেক রহমানের ঐক্যের নির্দেশ এখনো বাস্তবায়ন হচ্ছে না খুলনা-২ আসনে


ছবিঃ খুলনা-২ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে। (সংগৃহীত)

PNN নিউজ ডেস্ক | খুলনা:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনা-২ (সিটি করপোরেশনের ১৬ থেকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড) আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পর দলটির ভেতরে তীব্র দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই নগর বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের অনেক নেতা ও কর্মী এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন দলীয় কার্যক্রম থেকে দূরে ছিলেন এবং অতীতে বিভিন্ন সময় দলের ঐক্য নষ্টে ভূমিকা রেখেছেন। তাঁদের দাবি, এমন একজন নেতাকে প্রার্থী করা উচিত যিনি তৃণমূলের আস্থা ও সমর্থন ধরে রাখতে পারবেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রার্থীদের মধ্যে মতবিরোধ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দিলেও খুলনা-২ আসনে সেই নির্দেশ এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এমনকি প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পরও বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দুই পক্ষ আলাদা কর্মসূচি পালন করেছে।

গত শুক্রবার রাতভর কেডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। বৈঠকে নগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের শতাধিক নেতা অংশ নেন। বৈঠকে নেতারা অভিযোগ করেন, নজরুল ইসলাম তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি এবং অতীতে জিয়া পরিবারকে নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেছেন—যা এখনো অনেক নেতার মনে ক্ষোভের কারণ।

বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, নজরুল ইসলামকে প্রার্থী করলে তৃণমূলের অনেকেই নির্বাচনী মাঠে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। প্রয়োজনে অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য নেতা কিংবা রকিবুল ইসলাম বকুলকেই প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।”

খুলনা সদর থানা বিএনপির সভাপতি হুমায়ূন কবির জানান, বৈঠকে অধিকাংশ নেতা নজরুল ইসলামের প্রার্থিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দলীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল নেতারা একমত যে, ঐক্য ছাড়া খুলনা-২ আসনে বিজয় সম্ভব নয়।”

অন্যদিকে, নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সমর্থকেরা বলছেন, তিনি পদ হারানোর পরও রাজনীতি থেকে দূরে যাননি। বরং তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় থেকেছেন এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দলের আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।

যোগাযোগের চেষ্টা সত্ত্বেও নজরুল ইসলাম সরাসরি মন্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে সম্প্রতি তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “খুলনায় মতভেদ থাকলেও আমরা সেটা মোকাবিলা করব। মনোনয়ন এখন চূড়ান্ত, তাই এখন প্রার্থী নয়, নির্বাচনের জয়ই মূল লক্ষ্য।”

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন বলেন, “তৃণমূলের কর্মীরা দলের প্রতি দায়বদ্ধ। তাঁদের বক্তব্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, খুলনা-২ আসনে বিএনপির ভেতরকার এই বিভক্তি যদি দ্রুত নিরসন না হয়, তাহলে নির্বাচনী লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের জন্য সুযোগ তৈরি হতে পারে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন