Tuesday, October 14, 2025

তাহিরপুরের মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান হচ্ছে মাত্র দু’জন শিক্ষকের দায়িত্বে


ছবিঃ স্কুলের (সংগৃহীত)

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরপারের মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র দু’জন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান। এতে শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে এবং শিক্ষার মানও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত বিদ্যালয়টি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত। আশপাশের পাঁচটি গ্রামের শিশুরা এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। বর্ষা মৌসুমে অনেক শিক্ষার্থী নৌকা ব্যবহার করে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে।

বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষকের সংখ্যা ৫ জন। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনোই পূর্ণসংখ্যক শিক্ষক ছিলেন না। ২০২৩ সালে কিছু সময় তিনজন শিক্ষক পাঠদান চালিয়েছেন, তবে পরে দুইজন বদলিজনিত কারণে চলে যান। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৬ মে মুক্তার হোসেন নামে একজন সহকারী শিক্ষক যোগ দিলেও বর্তমানে তিনি মেডিকেল ছুটিতে রয়েছেন।

ফলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সানজু মিয়া একাই পাঁচটি শ্রেণির ১৫২ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান করছেন। একই সঙ্গে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বও পালন করছেন। অফিসিয়াল কাজ, মাসিক সভা বা উপজেলা সদরে যেতে হলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম আরও স্থবির হয়ে পড়ে।

বিদ্যালয়ে কোনো দপ্তরি না থাকায় সানজু মিয়াকেই সকালবেলা স্কুলের দরজা খোলা, পতাকা উত্তোলন, ঘণ্টা বাজানোসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রাব্বুল আখঞ্জি বলেন, “আমি বৃত্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, কিন্তু শিক্ষক না থাকায় নিয়মিত ক্লাস হয় না। এতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।”

স্থানীয় অভিভাবক ময়না মিয়া বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব চিন্তিত। শিক্ষক না থাকায় পড়ালেখায় আগ্রহ হারাচ্ছে তারা।” অপর অভিভাবক মোশারফ হোসেন বলেন, “আমার দুই ছেলে এই স্কুলে পড়ে। একদিন সকালে গিয়ে দেখি শিক্ষার্থীরা শুধু হৈ-হুল্লোড় করছে। একজন শিক্ষক একা কীভাবে সামলাবে?”

সহকারী শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সানজু মিয়া বলেন, “একজন শিক্ষক দিয়ে ১৫২ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানো সম্ভব নয়। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ না দিলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ হুমকিতে পড়বে।”

তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সুলেমান মিয়া জানান, “বর্তমানে একজন শিক্ষক মেডিকেল ছুটিতে আছেন। দ্রুত প্রেষণে নতুন শিক্ষক নিয়োগের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হবে।”

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন