- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আবু সাঈদ (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গুলিবিনিময়ের পর ঘটনাস্থল থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটে রবিবার (২২ জুন) গভীর রাতে, উপজেলার গাদালিয়া গ্রামে। জানা গেছে, পূর্ব বিরোধের জেরে দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপড়েন চলছিল। এই দুই পক্ষের নেতা, কুলঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা একরার হোসেন এবং একই গ্রামের বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান, এর আগেও সংঘাতে জড়িয়েছিলেন। গত শুক্রবার (২০ জুন) তাদের অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং উভয় পক্ষই প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে রবিবার সেনাবাহিনীর ৫৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের শান্তিগঞ্জ ক্যাম্প থেকে একটি দল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে নামে।
সেনা দলটি প্রথমে কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে অভিযান চালালে সন্ত্রাসীরা গা ঢাকা দেয়। তারা ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে হাওরপথে পালিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার গাদালিয়া গ্রামে আশ্রয় নেয়।
রাতেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই গ্রামে পৌঁছালে অস্ত্রধারীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সেনা সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। গোলাগুলির পর স্থানীয়রা আবু সাঈদের মরদেহ ঘটনাস্থলে দেখতে পান।
শান্তিগঞ্জ ক্যাম্পের একজন কর্মকর্তা জানান, "সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ গোলাবারুদ এবং একাধিক দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।" তবে, গোলাগুলির সময় আবু সাঈদ ঠিক কোন অবস্থানে ছিলেন বা তিনি কোন পক্ষের গুলিতে মারা গেছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে, আবু সাঈদ কেন গাদালিয়া গ্রামে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি কোনো পক্ষের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না—সে বিষয়েও এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। সেনাবাহিনীর অভিযান এখনো চলমান রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই তৎপরতায় এলাকাবাসী নিরাপত্তা ফিরে পাওয়ার আশা করছেন।
সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ছবিঃ দৈনিক ইনকেলাব