- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে সুনামগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁও সীমান্তে পৃথক ঘটনায় দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাগানবাড়ি সীমান্তে এবং শনিবার ভোরের দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের মিনাপুর সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে।
সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির জানান, এক বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারত থেকে গরু নিয়ে আসার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম (৪৫), যিনি লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল হক জানান, শফিকুল ১০ থেকে ১২ জনের একটি দলের সদস্য ছিলেন যারা অবৈধভাবে ভারত থেকে গরু নিয়ে ফিরছিলেন। এসময় বিএসএফ টহল দলের সদস্যরা তাদের ওপর গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তার সঙ্গীরা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে স্বজনরা তাকে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বুকে সরাসরি গুলি লেগেছিল শফিকুলের। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজিবির পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদপত্র দাখিল করা হয়েছে এবং পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে। সীমান্তে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির।
এদিকে, দিনাজপুর-৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মইন হাসান জানান, শনিবার ভোরের দিকে হরিপুর উপজেলার মিনাপুর সীমান্তে ৩৫৩ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ঘটনাটি ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ২০০ গজ ভেতরে ঘটেছে এবং নিহত যুবকের মরদেহ সেখানেই পড়ে আছে।
নিহত যুবকের নাম আসকার আলী (২৪)। তিনি হরিপুর উপজেলার জীবনপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বিজিবি জানায়, সকাল ৪টার দিকে আসকার এবং আরও কয়েকজন কাঁটাতারের বেড়ার কাছে গেলে ভারতের কিষাণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আসকার গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
ঘটনার পর বিজিবি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করেছে। অপরদিকে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষও তাদের অংশে বিএসএফ সদস্য সংখ্যা বাড়িয়েছে বলে জানা গেছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ জানান, আসকারের মরদেহ ফেরত আনার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে। উভয় পক্ষ পরবর্তী কূটনৈতিক যোগাযোগের অপেক্ষায় থাকায় সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে।