- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
শুক্র গ্রহে প্রাণের সম্ভাব্য অস্তিত্ব ঘিরে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। আজ সোমবার (২০ জুলাই) আন্তর্জাতিক একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, শুক্র গ্রহের মেঘে তাঁরা ফসফিন (Phosphine) গ্যাসের অস্তিত্ব শনাক্ত করেছেন। এই আবিষ্কার প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনাকে নতুন করে উসকে দিয়েছে।
এই গ্যাস সাধারণত পৃথিবীতে উৎপন্ন হয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য জীবের মাধ্যমে, যারা অক্সিজেনসমৃদ্ধ পরিবেশে বসবাস করে। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল টেলিস্কোপ এবং চিলির অ্যাটাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাবমিলিমিটার অ্যারে (ALMA) রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গবেষকরা এই গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন।
এই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. জেন গ্রিভস বলেন, “আমি বিস্মিত। এমন আবিষ্কার কল্পনাও করিনি।” গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে Nature Astronomy জার্নালে।
গবেষক দল সরাসরি প্রাণ শনাক্ত করেননি। তবে ফসফিন গ্যাসের উৎস হিসেবে তাঁরা সম্ভাব্য জৈব প্রক্রিয়াকেই সবচেয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা হিসেবে দেখছেন। এমআইটির আণবিক জ্যোতির্পদার্থবিদ ড. ক্লারা সুসা-সিলভা বলেন, “যদি সত্যি এই গ্যাস প্রাণের মাধ্যমে তৈরি হয়ে থাকে, তাহলে এটি ইঙ্গিত দেয় যে আমরা এই সৌরমণ্ডলে একা নই।”
শুক্রের পৃষ্ঠে চরম তাপমাত্রা (৪৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াস), এবং সালফিউরিক অ্যাসিডে পূর্ণ বায়ুমণ্ডলের কারণে পৃথিবীর পরিচিত কোনো প্রাণসত্তার সেখানে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
ফসফিনের উপস্থিতি কোনো অজৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়াতেও ঘটতে পারে কিনা—তা এখনও পরিষ্কার নয়। গবেষকরা সেই দিকেও নজর রাখছেন। তবে এটি নিঃসন্দেহে প্রাণের খোঁজে একটি বড় অগ্রগতি।
বিশ্বের বড় বড় মহাকাশ সংস্থা এতদিন মঙ্গল গ্রহের দিকেই বেশি নজর দিয়েছিল। তবে শুক্র পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী এবং এর গঠন অনেকটাই পৃথিবীর মতো। তাই নতুন এই আবিষ্কার শুক্রকে নতুন আলোয় দেখার সুযোগ এনে দিয়েছে।