- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্ট: PNN
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আজ বৃহস্পতিবার থেকে দুই সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি শুরু করেছেন। এতে দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে চলমান তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন বা বার্ষিক পরীক্ষা পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছে। অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নিজেই ফটকে তালা লাগিয়েছেন, কোথাও কোথাও পরীক্ষা হলেও তা চলছে ‘আধামাধা’ভাবে।
এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা না করে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চাকরি আইন ও ফৌজদারি আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। একাধিক শিক্ষক নেতাকে ইতিমধ্যেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, কারণ বার্ষিক পরীক্ষার সময় এই ধরনের কর্মসূচি শিক্ষার্থীর পড়াশোনার জন্য বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করা জরুরি, নাহলে শিক্ষার্থীর ক্ষতি আরও বাড়বে।
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো –
১. জাতীয় বেতন স্কেলে আপাতত ১১তম গ্রেড প্রদান করা।
২. চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা দূর করা।
৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা।
বর্তমানে সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন, যেখানে শুরু মূল বেতন ১১ হাজার টাকা। দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫,৫৬৯টি। শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি, আর শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ৫২ হাজার জন।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ২৭ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি শুরু করে। সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদও ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর কর্মবিরতি পালন করেছিল। দুই সংগঠন যৌথভাবে বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যালয়গুলোতে তালাবদ্ধ কর্মসূচি পালন করছে।
মন্ত্রণালয় আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের অবিলম্বে কাজে যোগদান করে তৃতীয় প্রান্তিকের পরীক্ষা গ্রহণ ও বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়ে বেতন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, এবং অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নের জন্য অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করা হয়েছে, কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীর শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং চাকরি আইন, আচরণ বিধিমালা ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।