- ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার পরিমাণ ৬.৩ বিলিয়ন বা ৬৩০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের মাস আগস্টের তুলনায় ১৭.২৯ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক অর্থনৈতিক সূচক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে আমদানিকারকরা ৫.৩৮ বিলিয়ন ডলারের এলসি খুলেছিলেন। যদিও সেপ্টেম্বরে এলসি খোলার এই বৃদ্ধি আট মাস পর আমদানি কার্যক্রমে উত্থান ঘটালেও, তা ২০২৫ সালের জানুয়ারির ৬.৮৪ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় এখনও কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি বছরের আগস্ট ও ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এলসি খোলার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। তবে, এবার মূলত ভোগ্যপণ্য, খাদ্যদ্রব্য, কাঁচামাল এবং সরকারি সার আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি সচল রাখতে মাসিক আমদানিতে আরও ২ বিলিয়ন ডলার যোগ হওয়া প্রয়োজন।
সম্প্রতি দেশের শীর্ষ ২০ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর রমজান মাসের আগে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে যথেষ্ট পরিমাণ এলসি খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ব্যবসায়িক চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহের আশ্বাসও দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে রাখার মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তবে, ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানো হয়নি। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাজারে পর্যাপ্ত ডলার থাকলেও ব্যবসায়ীরা মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন এবং বর্তমানে অধিকাংশ আমদানি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের।
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে এবং ব্যাংকগুলোও নতুন ঋণ প্রদানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ফলে আগস্টে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত এক বছরে ধারাবাহিকভাবে কমেছে। জুলাইয়ে সর্বনিম্ন ঋণ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
তবে, চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং রপ্তানি আয় আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে বেশি ডলার রয়েছে, যা তাদের আরো বেশি আমদানি এলসি খোলার সুযোগ করে দিয়েছে।