- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের মাসুদপুর সীমান্ত এলাকা থেকে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তির রক্তাক্ত ও ঝলসে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ শনিবার দুপুরে হঠাৎপাড়া গ্রামের একটি আমবাগান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে বিজিবির ৫৩ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। নিহত শফিকুল ওই গ্রামের বাসিন্দা এবং মুক্তিযোদ্ধা সেরাজুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শফিকুল ইসলাম ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর নির্মম নির্যাতনে নিহত হয়েছেন। তাঁর শরীরে জখমের চিহ্ন, দাঁত ভাঙা এবং ঝলসানো অংশ পাওয়া গেছে, যা অ্যাসিডে দগ্ধ হওয়ার মতো বলেও দাবি করছেন পরিবার ও এলাকাবাসী।
নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই ও মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ সমির উদ্দীন বলেন, “শফিকুলের শরীরে অনেক ফোসকা ছিল, দাঁত ভাঙা, গলায় রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। এগুলো দেখে মনে হয় কেউ পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম পেশায় জেলে হলেও সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ও একই গ্রামের সেলিম (৩৫) নামের আরেক ব্যক্তি নদীপথে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যান। এরপর থেকেই তাঁদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শনিবার পদ্মা নদীর তীরবর্তী বাতাসার মোড় এলাকা থেকে শফিকুলের মরদেহ উদ্ধার করে আত্মীয়স্বজনরা বাড়ি নেওয়ার পথে তারাপুর এলাকায় বিজিবি মরদেহটি নিজেদের হেফাজতে নেয়।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ বলেন, “লাশটি পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”
তিনি আরও জানান, ভারতের পক্ষেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে বিএসএফ জানিয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
এদিকে শফিকুলের সঙ্গে ভারতে যাওয়া সেলিম এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, সীমান্তে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে এই ঘটনা।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নিখোঁজ সেলিমের সন্ধানে খোঁজখবর অব্যাহত থাকবে।