সারাদেশে অনুভূত শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৬, ঢাকায় ৩ জন সহ নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে আরও প্রাণহানি

PNN নিউজ ডেস্ক। ঢাকা

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে সারা দেশে অনুভূত শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকায় তিনজন, নারায়ণগঞ্জে এক শিশু এবং নরসিংদীতে দুইজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। বিভিন্ন জেলায় বহু মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি একাধিক ভবন, দোকান ও স্থাপনায় ফাটল দেখা গেছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.৫। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী অঞ্চলে, ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। স্বল্প গভীরতার কারণে দেশের বিভিন্ন অংশে কম্পন ব্যাপকভাবে অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পের প্রভাবে রাজধানীসহ গোপালগঞ্জ, রংপুর, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, সিলেট, ফেনীসহ বহু জেলায় ভবন দুলে ওঠে এবং মানুষ আতঙ্কে ঘরবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে বলে এনডিটিভি জানায়।

রাজধানীর বংশালের কসাইটুলী এলাকায় একটি পাঁচতলা ভবনের রেলিং নিচে পড়ে তিন পথচারীর মৃত্যু হয়। বংশাল থানার ওসি জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রেলিংটি হঠাৎ ভেঙে পড়ে।
স্থানীয় সিসিটিভির ভিডিওতে দেখা যায়, রেলিং ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পথচারীরা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং আশপাশের মানুষ দ্রুত তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি টিনশেড বাড়ির দেওয়াল ধসে পড়ে ফাতেমা নামে এক বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়। শিশুটির মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী এক নারী আহত হন।

রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, ভূমিকম্পের সময় কুলসুম বেগম মেয়েকে নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির দেওয়াল ভেঙে তাদের ওপর পড়ে।

নরসিংদী সদরের গাবতলি এলাকায় ভূমিকম্পের সময় বাড়ির সানশেড ধসে পড়ে ওমর (১০) নামে এক শিশু ও ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ নিহত হন। শিশুটির বাবা দেলোয়ার হোসেন গুরুতর আহত হয়ে ঢামেকে চিকিৎসাধীন আছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, ভূমিকম্প শুরু হলে দেলোয়ার হোসেন তিন সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন, ঠিক তখনই সানশেড ভেঙে পড়ে।

এ ছাড়া পলাশ উপজেলার মালিতা গ্রামে একটি মাটির ঘরের দেওয়াল ধসে পড়ে এক ৭৫ বছরের বৃদ্ধ নিহত হন।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভবনের দেয়ালে ফাটল, সিঁড়িতে চিঁড় ধরা এবং দোকানের মালামাল নিচে পড়ে ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। অনেক জায়গায় পুরনো ভবনে বড় ধরনের কাঠামোগত ক্ষতির চিহ্ন দেখা গেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি চিহ্নিত করতে বিশেষজ্ঞ দল মাঠে কাজ করছে।