Friday, December 5, 2025

সাবেক সচিবের চালকের পুকুরে যাওয়ার জন্য ৩১ লাখ টাকায় সেতু


ছবিঃ পুকুরে যাওয়ার জন্য ৩১ লাখ টাকায় সেতু নির্মাণ সাবেক সচিবের (সংগৃহীত)

PNN নিউজ ডেস্ক | শরীয়তপুর:

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় এক বিতর্কিত কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে— আশপাশে কোনো বসতবাড়ি বা জনবসতি না থাকা সত্ত্বেও একটি সরকারি প্রকল্পের আওতায় খালের ওপর নির্মিত এই কালভার্টটি মূলত একজন সাবেক সচিবের গাড়িচালকের ব্যক্তিগত পুকুরে প্রবেশের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চরধানকাটি আদাসন দরবার শরীফ সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ৩১ লাখ ১২ হাজার টাকায় কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। কাজটি সম্পন্ন করে স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মিনহাজ ট্রেডার্স’। নির্মাণের সময় কালভার্টটির কোনো সরকারি আইডি নম্বর ছিল না, পরে উপজেলা এলজিইডি থেকে সেটিকে আইডি দেওয়া হয়।

কালভার্টটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ— সরকারি অর্থে জনগণের উপকারে না এনে বরং একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সুবিধার্থে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন দেওয়ান, আতিক মিয়া ও রমজান আলী বলেন, “যেখানে সেতুটি করা হয়েছে সেখানে মানুষ থাকে না, রাস্তা পর্যন্ত নেই। অথচ পাশের গ্রামগুলোতে মানুষ এখনো বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। এটি জনগণের নয়, একজন ব্যক্তির জন্য বানানো হয়েছে।”

আরেক বাসিন্দা নাজির মাঝি বলেন, “সরকারি টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। ব্রিজটি এখনো ব্যবহার হয় না— কেবল একটি পুকুরের সামনে পড়ে আছে।”

স্থানীয় ইয়ামিন মোড়ল জানান, “ব্রিজের ওপাশে শুধু পুকুর, কোনো ঘরবাড়ি নেই। অথচ এলাকাবাসীর জন্য প্রয়োজনীয় স্থানে কোনো অবকাঠামো হচ্ছে না।”

এ বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল বলেন, “আমরা উপজেলা থেকে এই প্রকল্পের প্রস্তাব দিইনি। সচিবের গাড়িচালক ব্যক্তিগত তদবিরে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে পাঠান। শুরুতে আমরা বলেছিলাম এটি প্রকল্পের আওতায় পড়ে না, কিন্তু পরবর্তীতে হেড অফিস থেকে অনুমোদন আসে, তাই বাধ্য হয়ে কাজটি করতে হয়।”

অন্যদিকে শরীয়তপুর জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. রাফেউল ইসলাম বলেন, “তখন প্রকল্পের আওতায় পাশের রাস্তা উন্নয়নের কথাও বলা হয়েছিল। সেই ভিত্তিতেই কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। ব্যক্তিস্বার্থে সেতু নির্মাণের অভিযোগ সঠিক নয়।”

স্থানীয়দের দাবি, যেই স্থানে সেতুটি নির্মিত হয়েছে, সেখানে কোনো সড়ক না থাকা সত্ত্বেও কেবল একটি পুকুরের সামনে সরকারি অর্থে ব্রিজ নির্মাণ সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন