- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আবারও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিন শেষে মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত হিসাবপদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী এই রিজার্ভের পরিমাণ ২৪ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুন পর্যন্ত রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে ২৪ দিনের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম৬ অনুযায়ীও একই সময়ে রিজার্ভ কমেছে ১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।
এর মধ্যে ৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) মে ও জুন মাসের আমদানি বাবদ বকেয়া বিল হিসেবে পরিশোধ করেছে ২০১ কোটি ডলার। এ বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম৬ পদ্ধতিতে তা হয় ২৪ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রবাসীরা বৈধ পথে দেশে আয় পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছেন। সদ্যসমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। একই সময় পণ্য রপ্তানিতেও ৮ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা বৈদেশিক আয়ের আরেকটি বড় উৎস।
এই দুই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়ায় বাজারে চাপ কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১০ মাস ধরে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে না। বরং সম্প্রতি তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিলামের মাধ্যমে ডলার কিনেছে, যাতে করে রিজার্ভ আরও স্থিতিশীল রাখা যায়।
রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এবং আমদানি খাতে চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় ডলারের ওপর চাপ কমে এসেছে। এর ফলে টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য কিছুটা কমে যায়। তবে চলতি মাসে এই হার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করছে।
এছাড়া বাজেট সহায়তা, রাজস্ব খাত সংস্কার এবং ব্যাংক খাতে সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ দেশে আসছে, যা আগামী দিনে রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চাপের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার কিছুটা স্থিতিশীলতার দিকে ফিরছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।