Friday, December 5, 2025

রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহের সামনে ড্রাম থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার


ছবি: জাতীয় ঈদগাহের সামনে থেকে দুটি নীল রঙের ড্রামে খণ্ডিত অবস্থায় আশরাফুল হকের (৪৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। (সংগৃহীত)

PNN নিউজ ডেস্ক | ঢাকা:

রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহের সামনে ফেলে রাখা দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের (৪৩) খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হাইকোর্ট সংলগ্ন এলাকায় ব্যাগ ও ড্রাম থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এ লোমহর্ষক ঘটনা উন্মোচন করে।

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের গোপালপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল হক পেশায় কাঁচামাল ব্যবসায়ী ছিলেন। হিলি থেকে মালামাল কিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করতেন। তার বাবার নাম মো. আ. রশিদ।

ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ প্রথমে দুটি ড্রামে ভর্তি চালের স্তূপ সরিয়ে কালো পলিথিনে মোড়ানো দেহের খণ্ডাংশ খুঁজে পায়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে।

এখন পর্যন্ত হত্যার কারণ ও পদ্ধতি স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশ ধারণা করছে, দু-এক দিন আগেই আশরাফুলকে হত্যা করা হতে পারে। কারা কীভাবে মরদেহ ড্রামে ভরে ব্যস্ত এলাকায় রেখে গেছে—তা জানতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে সাড়ে ২টার মধ্যে একটি ভ্যানযোগে দুই ব্যক্তি এসে ড্রাম দুটি ফেলে যেতে দেখা গেছে। স্থানীয়দের এ তথ্যকে কেন্দ্র করে তদন্ত আরও এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন আগে অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে রেখে আশরাফুল তার মালয়েশিয়া ফেরত বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকায় যান। স্ত্রী লাকী বেগম ফোন করলে বেশিরভাগ সময় জরেজই রিসিভ করতেন এবং আশরাফুল ব্যস্ত আছেন বলে জানাতেন।

বুধবার বিকাল ৫টায় স্ত্রী লাকীর সঙ্গে আশরাফুলের সর্বশেষ কথা হয়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরেও লাকী বেগম স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে জরেজ জানান—আশরাফুলের ফোন নাকি ড্রেনে পড়ে গেছে।

পরবর্তীতে লাকী ও তার ভাই বদরগঞ্জ থানায় জিডি করতে গেলে জানতে পারেন, ঢাকায় ড্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত মরদেহটি আশরাফুলের। এ খবর শুনে লাকী বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন।

আশরাফুলের শ্যালক আব্দুল মজিদ দাবি করেন, নিখোঁজের বিষয়টি শুরু থেকেই সন্দেহজনক ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, আশরাফুলকে নিয়ে ঢাকায় আসা তার বন্ধু জরেজ মিয়া এ ঘটনা সম্পর্কে “অনেক কিছু জানে”। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, নিহতের স্বজনদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে রমনা থানায় পাঠানো হয়েছে। দুই থানার কর্মকর্তারা সমন্বিতভাবে তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছেন।

রাজধানীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও এমন পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ও মরদেহ লুকানোর কৌশল জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পুলিশ বলেছে—দ্রুত সিসিটিভি ফুটেজ, কল রেকর্ড ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা হবে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন