পিরোজপুরের নাজিরপুরে প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ: স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে ৪ দিনেও মামলা হয়নি

PNN নিউজ ডেস্ক | পিরোজপুর:

পিরোজপুরের নাজিরপুরে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে ঘটনার চার দিন পরও ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার মামলা করতে পারেনি বলে জানা গেছে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) উপজেলার শাঁখারীকাঠী ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তের নাম মো. দিনু ফকির (৭০), তিনি ওই গ্রামের মৃত ফিরোজ ফকিরের ছেলে।

ভুক্তভোগী শিশুটির পিতা জানান, ঘটনার দিন বিকালে তার মেয়ে অভিযুক্ত দিনু ফকিরের বাড়ির কাছের নদীর পাড়ের একটি মাঠে অন্য শিশুদের সাথে খেলা করছিলো। এ সময় অভিযুক্ত দিনু ফকির তাকে টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসেন।

তবে অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল তৎপর হয়ে উঠেছে। ভুক্তভোগীর পিতা জানান, স্থানীয় জামায়াত নেতা ফরহাদসহ কয়েকজন বিষয়টি 'মিটমাট' করে দেওয়ার কথা বলেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় জামায়াত নেতা ফরহাদ বলেন, "ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা আমার কাছে এসেছিলো। তবে বিষয়টাতা তারা নিজেরাই মিটমাট করে ফেলবে। মেয়ের বাবাকে কিছু টাকা দেওয়ার কথা বলছে, তা দিবে। স্থানীয় ওয়াহাব ফকিরের কাছে ১০ হাজার টাকা জমাও দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা দিবে। এ নিয়ে লেখার দরকার নাই।"

এদিকে অভিযুক্ত দিনু ফকিরের ছেলে রাজু ফকিরও বিষয়টি 'মিটমাট' হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন এবং এতে সাংবাদিকের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন। তবে অভিযুক্ত দিনু ফকির নিজে দাবি করেছেন যে তিনি পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং তিনি এমন কাজ করেননি।

মামলা না হওয়ার বিষয়ে নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ আল ফরিদ ভূইয়া বলেন, "এ বিষয়ে তার কাছে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপের কারণে ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের শিকার হওয়া একটি শিশুর পরিবার আইনি প্রতিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যা সমাজে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।