Friday, December 5, 2025

অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ জামায়াতের


ছবিঃ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বক্তব্য দিচ্ছেন। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে আন্দোলনরত আট দলের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি নানা বিষয়ে কথা বলেন (সংগৃহীত)

স্টাফ রিপোর্টার | PNN: 

অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন—এমন অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। শুক্রবার সকালে মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে আট দলীয় জোটের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তিনজন উপদেষ্টা পরিকল্পিতভাবে সরকারকে এমন দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আর না হতে পারে।’ একই সঙ্গে তিনি ওই উপদেষ্টাদের অপসারণের দাবি জানান। তাঁর ভাষায়, প্রধান উপদেষ্টার কাছে নাম প্রেরণ করা হলেও পদক্ষেপ না নিলে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হলে গণভোট গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন তাহের। তাঁর দাবি, একটি রাজনৈতিক দল ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে গণভোটে ভোটার উপস্থিতি কম হয় এবং পরে বলা যায়—জনগণ সংস্কার চায় না।

তাহের বলেন, ‘সরকার ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় একটি দলের ফাঁদে পড়েছে। এতে সংস্কারের প্রশ্নটি গুরুত্বহীন হয়ে গেছে।’

জামায়াতের নায়েবে আমির অভিযোগ করেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যথাযথভাবে গ্রহণ করা হয়নি। বরং একটি দলের সঙ্গে সমঝোতা করে অনেক সুপারিশ পরিবর্তন করা হয়েছে, যা জনমনে হতাশা তৈরি করেছে।

তবে তিনি প্রধান উপদেষ্টার একটি সিদ্ধান্তের প্রশংসাও করেন। তাহের বলেন, বিএনপি অধ্যাদেশের মাধ্যমে সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে চাইলেও প্রধান উপদেষ্টা আদেশের মাধ্যমে তা করার ব্যাপারে অনড় ছিলেন—এ জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানানো যায়।

সংস্কার কমিশন একটি প্যাকেজে ‘হ্যাঁ’–‘না’ ভোট নেওয়ার পরামর্শ দিলেও সরকার গণভোটের প্রশ্ন চার ভাগ করেছে। তাহেরের মতে, এতে ভোটারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হয়ে পড়বে এবং এতে লাভবান হবে কেবল একটি দলই।

সরকার প্রশাসনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার বিষয়ে আন্তরিক নয় বলেও অভিযোগ করেন তাহের। তাঁর দাবি, প্রশাসনে দলীয়করণ বাড়ানোর আয়োজন চলছে, এবং কয়েকজন উপদেষ্টা এতে সহায়তা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনসহ আট দলের শীর্ষ নেতারা। জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

জামায়াতসহ সমমনা আট দল পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে, যার মধ্যে রয়েছে—

  • জুলাই জাতীয় সনদের সাংবিধানিক আদেশ জারি

  • নভেম্বরেই গণভোট আয়োজন

  • নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা

  • প্রশাসনে নিরপেক্ষতা

  • সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পুনর্বহাল

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দলগুলোর এই চাপ–সৃষ্টির কৌশল আগামী নির্বাচন ও গণভোটকে আরও রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত করে তুলবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন