Tuesday, October 14, 2025

কুড়িগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় যুবকের মৃত্যু, তদন্তের দাবি স্বজনদের


ছবি: জেনারেল হাসপাতাল কুড়িগ্রাম (সংগৃহীত)

কুড়িগ্রাম ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় ফুলবাবু দাস (১৮) নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলার পুরুষ ওয়ার্ডে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত ফুলবাবু দাস কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের পূর্ব নাওড়া গ্রামের সুখ চরণ দাসের ছেলে।

স্বজনদের অভিযোগ, রাত ৮টার দিকে ফুলবাবুর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে আনা হয় এবং ভর্তি করে ৬ষ্ঠ তলায় নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক বা নার্স কেউ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত রোগীকে দেখতে আসেননি। একপর্যায়ে ফুলবাবুর মুখ দিয়ে রক্ত বের হয় এবং রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের মা বকুল রাণী দাস অভিযোগ করে বলেন, “ভর্তির পর আমার ছেলের মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল, কিন্তু কেউ চিকিৎসা করতে আসেনি। আমার ছেলে শ্বাসকষ্টে মারা গেছে। চিকিৎসকদের অবহেলাই তার মৃত্যুর কারণ।”

রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পল্লী চিকিৎসক বাদল সরকার জানান, “রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর এক ঘণ্টা কেটে গেলেও কোনো ডাক্তার বা নার্স রোগীকে দেখেনি। অক্সিজেন চেয়ে অনেক ডাকাডাকি করা হয়েছে, কেউ আসেনি।”

চোখের সামনে মৃত্যুর সাক্ষী হওয়া প্রত্যক্ষদর্শী সবুজ মিয়া বলেন, “রোগী বিছানায় পড়ে যাচ্ছিল, নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেয়নি। মৃত্যুর পরেও ইসিজি আর স্যালাইন দেওয়া হয়।”

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স কোহিনুর খাতুন বলেন, “আমরা বসে ছিলাম না। একসঙ্গে অনেক রোগী আসায় চাপ ছিল। আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না।”

দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল হান্নান বলেন, “রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। আমাকে কিছু জানানো হয়নি।”

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন বলেন, “ঘটনার পর সকালে তদন্ত করেছি। রোগীর প্রচুর জ্বর ছিল এবং মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল। তাকে রেফার করা হলেও তারা অন্যত্র যাননি। চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগ সঠিক নয়।”

এর আগে গত ২৫ জুলাই একই হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় জামাল বাদশাহ (৫৫) নামের আরেক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে, যা জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে।

স্বজন ও স্থানীয়দের দাবি, এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতি উন্নয়নের দাবিও জানানো হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন