- ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) প্রশাসন র্যাগিং, মারামারি, মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়, শিক্ষককে আঘাত, ধর্ম অবমাননা এবং অন্যান্য শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে ১২ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয় গত ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের ২৭তম সভায়, যেখানে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হয়। বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমুস সাদাত বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অফিস আদেশ অনুযায়ী, অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের উপর স্থায়ী বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার, আর্থিক জরিমানা এবং অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদানের মতো শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, বাংলা ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. মোবারক হোসেন নোমানকে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে একজন শিক্ষককে আঘাতের অভিযোগে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে, তার সনদ বাতিল এবং ক্যাম্পাসে আজীবন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় মানবিক বিবেচনায় তার সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সামান্য আম পাড়া নিয়ে একজন মেধাবি ছাত্রের বিরুদ্ধে এরকম কঠিন সিধ্বান্ত রাজনিতি মুক্ত খুবি তে নিরীহ ছাত্রদের উপর ক্ষমতাধর শিক্ষকদের অনৈতিক আধিপত্য হিসাবেই দেখছে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা।
আরেকদিকে ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় আইন ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের মো. জাহিদুল ইসলামকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। একই ঘটনায় আইন ডিসিপ্লিনের আরও দুই শিক্ষার্থী মেহেরাফ হোসেন রাব্বী ও আমিনুল এহসানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণ শৃঙ্খলা বিধি মেনে চলার শর্তে অভিভাবকসহ মুচলেকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাদক সেবন, ক্রয় ও বিক্রয়ের অভিযোগে অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের হাসান হাওলাদার এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের আমিনুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের মো. রাসেল শেখকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই অভিযোগে ওই ডিসিপ্লিনের তনয় রায়কে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
র্যাগিংয়ের ঘটনায় গণিত ডিসিপ্লিনের কেএম রাউফুল আলম অর্নবকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই ঘটনায় মো. রিমন মিয়া, আহসান হাবীব এবং মো. সালমান হোসেনকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে গণিত ডিসিপ্লিনের বাবুল আক্তার দুর্জয়, রাশেদ খান মেনন এবং বাঁধন রায়কে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসে মারামারির অভিযোগে শিক্ষা ডিসিপ্লিনের মো. উমর ফারুক ও সাদমান উদ দৌলাকে চলতি টার্মের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের মনিরুজ্জামান রিয়াদ এবং শিক্ষা ডিসিপ্লিনের জিয়াদ আল সামসকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।