- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রায় চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, একটি বিশেষ আদেশ জারি করে গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন, এবং আগামী সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব। আজ সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই সুপারিশ জমা দেওয়া হতে পারে।
কমিশনের একাধিক সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যা প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত বা আপত্তি কোনোভাবেই গণভোটে প্রভাব ফেলবে না। সনদ অনুযায়ী প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর ওপরই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, এবং "হ্যাঁ" ভোট পেলে সেই সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হবে। এছাড়া, গণভোটে পাস হলে আগামী সংসদে সংবিধান সংস্কারের অংশ হিসেবে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবও আনা হতে পারে।
ঐকমত্য কমিশন গতকাল রোববার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে প্রাথমিক সুপারিশ তৈরি করেছে। সূত্র জানায়, এই প্রক্রিয়ার ৯০ শতাংশ কাজ গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকালে কমিশন আবার বৈঠক করে সুপারিশ চূড়ান্ত করবে এবং দুপুরে তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য প্রথমে একটি "জুলাই সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ" জারি করা হবে। এই আদেশের অধীনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, যার ভিত্তিতে আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সনদের সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করবে। সংসদ কাজের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবেও কাজ করবে।
এছাড়া, ঐকমত্য কমিশন নতুন একটি বিকল্প পদ্ধতি সুপারিশ করতে পারে, যেখানে সংস্কার প্রস্তাবগুলো একটি বিল আকারে উপস্থাপন করে তার ভিত্তিতে গণভোট করার প্রস্তাব থাকবে। তবে, এই বিকল্পটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
গণভোটের দিন এবং তার ভিত্তি নিয়ে কিছু মতবিরোধ থাকলেও কমিশন জানিয়েছে, সরকারের কাছে গণভোটের সময়সূচি এবং আদেশের কনটেক্সটের বিষয়টি চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া, কিছু বিশেষ প্রস্তাবের বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির মধ্যে কিছু মতবিরোধ থাকার পরও কমিশন বিষয়টি সমাধান করতে কাজ করছে।
এছাড়া, ২৭০ দিনের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন না হলে সংসদ বিলুপ্তির মতো কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তবে ইতিবাচক বিকল্প নিয়ে ভাবছে কমিশন।
এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আরও জানিয়েছে, আগামী সংসদে দ্বিকক্ষ পদ্ধতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর কাজ করছে।