- ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
ভবিষ্যতে কোনো সরকার যেন জুলাই অভ্যুত্থানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে, সেজন্য এই অভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত ‘অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, "জুলাইয়ের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে।" তিনি জানান, সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে এর বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে। একইসঙ্গে, বর্তমানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক বৈধতাও সেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপির এই ভাষ্য গত ফেব্রুয়ারি মাসেই জমা দেওয়া হয়েছে এবং সম্প্রতি সেটির পরিমার্জিত একটি সংস্করণও জমা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন, যাতে এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে।
আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার এবং তার দোসরদের বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, "আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিষয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার মন্ত্রী, এমপি এবং যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।"
তবে, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত নন, তাদের বিষয়ে ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন গঠনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, "যদি হাজার, হাজার, লাখ, লাখ বিচার করতে হয়, তাহলে জাতিকে সব সময় প্রতিশোধ ও বিভক্তির মধ্যে থাকতে হবে। তাই ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।"
তিনি এ সময় গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা স্লোগানধারীদেরও সমালোচনা করেন, মন্তব্য করে যে তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বিশ্বাস করেন যে এই ঐক্যই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, খেলাফত ছাত্র মজলিস, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র আন্দোলন এনডিএম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, জুলাইয়ের ঐক্যকে নষ্ট করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে এবং একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল জুলাইয়ের অর্জনকে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। এ সময় তারা একাত্তর এবং চব্বিশের গণহত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন।