Tuesday, October 14, 2025

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি সম্পন্ন, গণভোটের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধ


প্রতীকী ছবিঃ বিএনপি (বাঁ থেকে), জামায়াত, এনসিপি (সংগৃহীত)

স্টাফ রিপোর্টার | PNN: 

সংবিধান ও রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবনাকে কেন্দ্র করে আলোচিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি, বিশেষ করে গণভোটের সময় ও ধরণ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে এখনও মতপার্থক্য রয়ে গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের তত্ত্বাবধানে আগামী ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধি অংশ নেবেন, আর নেতৃত্ব দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বিএনপি জানিয়েছে, দলটি সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ দলের পক্ষে স্বাক্ষর করবেন। বিএনপির মতে, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজন করলে তা হবে “অর্থনৈতিকভাবে যুক্তিসংগত ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল”।

জামায়াতে ইসলামীও সনদে স্বাক্ষরের জন্য দুই শীর্ষ নেতাকে মনোনীত করেছে—নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তবে দলটি জানিয়েছে, চূড়ান্ত কপি না দেখে তারা স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নেবে না।
জামায়াত দাবি করেছে, সংসদে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত না হলে তাদের আপত্তি থাকবে।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর গঠিত তরুণদের দল **জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)**ও সনদে স্বাক্ষরের জন্য নিজেদের প্রতিনিধি—আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নাম ঠিক করেছে। তবে এনসিপি জানিয়েছে, “সনদের চূড়ান্ত কপি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া না দেখা পর্যন্ত” তারা সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখবে।

এছাড়া নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন ও এবি পার্টি-ও স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাহমুদুর রহমান মান্না, জোনায়েদ সাকি ও মজিবুর রহমান মঞ্জু নিজ নিজ দলের পক্ষে সই করবেন।

বিএনপি ও তাদের মিত্ররা জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের পক্ষে, অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনের আগেই গণভোট চায়। তাদের মতে, আগে গণভোট হলে জনগণের অংশগ্রহণ ও আগ্রহ বাড়বে, আর একই দিনে আয়োজন করলে “জনগণের মনোযোগ বিভ্রান্ত” হতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী এক-দুই দিনের মধ্যেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সনদের চূড়ান্ত খসড়া তাদের হাতে তুলে দেবে। এরপরই স্বাক্ষর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সব দলের লক্ষ্য এখন এক—জুলাই জাতীয় সনদ যেন রাজনৈতিক ঐক্যের প্রতীক হয়ে নতুন রাষ্ট্র সংস্কারের অধ্যায়ের সূচনা করে। তবে গণভোটের সময় ও রূপ নিয়ে মতপার্থক্য থেকেই যাচ্ছে—যা সনদের ঐকমত্যের দৃঢ়তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক মহলে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন