- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে সমাহিত জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে নিহত অজ্ঞাত ১১৪ জন শহীদের লাশ উত্তোলনের কাজ আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হবে। এই লাশের পরিচয় শনাক্ত এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের জন্য সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার আদালতের অনুমতি পাওয়ার পরও আদেশের কপি সিআইডি’র কাছে পৌঁছাতে সময় লাগায় মঙ্গলবার লাশ উত্তোলন কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে এবং আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হবে।
সিআইডির মুখপাত্র ও বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন খান জানিয়েছেন, ‘আদালতের আদেশ শেষ মুহূর্তে হাতে পাওয়ায় আজ কাজ শুরু হয়নি, তবে আগামীকাল থেকে রায়েরবাজার গণকবর থেকে লাশ উত্তোলনের কাজ শুরু হবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা বলেন, ‘রায়েরবাজার গণকবর থেকে লাশ উত্তোলনের পর প্রতিটি মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে পরিচয় নিশ্চিত ও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়।’
লাশ উত্তোলন প্রক্রিয়ায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে সিআইডির ফরেনসিক টিম এবং সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করবেন।
গত ২ আগস্ট স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সরেজমিনে গিয়ে জানান, এখানে ১০০ জনেরও বেশি শহীদকে দাফন করা হয়েছে যাদের অনেকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন স্বজনরা লাশ উত্তোলনে রাজি না থাকলেও এখন তারা সম্মত হয়েছেন।
মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম আদালতে আবেদন করে জানান, গত বছরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত নারী-পুরুষদের মধ্যে ১১৪ জনকে অজ্ঞাত পরিচয়ে রায়েরবাজারে দাফন করা হয়। লাশ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করে ভবিষ্যতে তাদের পরিবারকে লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই উদ্যোগকে শহীদ পরিবার ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইতিবাচক বলে বিবেচনা করছে। তারা মনে করে, এটি ইতিহাসের সত্য উদঘাটন এবং শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার পরিচায়ক হবে।