- ২০ অক্টোবর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক | ঢাকা:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা ও শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইন খুনের ঘটনায় এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে আটক করেছে বংশাল থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছাত্রী জানান, তার ৯ বছরের পুরনো সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণে তিনি জুবায়েদকে খুন করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে। বংশাল থানাধীন আরমানিটোলার একটি ভবনে ওই ছাত্রী তার বাসায় জুবায়েদকে খুন করেন। সিঁড়ির নিচ থেকে তিন তলা পর্যন্ত রক্তের দাগ পাওয়া যায় এবং তিন তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার লাশ। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
অভিযুক্ত তরুণের নাম মো. মাহির রহমান, যিনি বোরহানউদ্দিন কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পুলিশ সন্দেহ করছে, মাহির ও তার বন্ধু জুবায়েদের হত্যায় জড়িত। এর আগে, ৯ বছরের সম্পর্কের পর জুবায়েদের প্রেমিকা তাকে খুন করে, কারণ তিনি জুবায়েদকে পছন্দ করতেন এবং তার পুরনো প্রেমিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ক্ষিপ্ত হয়ে জুবায়েদকে হত্যা করেন।
জুবায়েদ হোসাইন ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় একটি ছাত্রাবাসে থাকতেন এবং ছাত্রদের পড়াতেন।
ঘটনার পরপরই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় লোকজন ওই বাসাটি ঘিরে রাখেন এবং বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ করে। ছাত্ররা দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়। তবে ঘটনার প্রায় ১৫ ঘণ্টা পরেও মামলা নেয়নি পুলিশ, যা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
ভুক্তভোগীর বড় ভাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এনায়েত হোসাইন সৈকত বলেন, "আমরা ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি, যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তারা হলেন, ছাত্রী, তার বাবা-মা, মামা, প্রেমিক মো. মাহির রহমান এবং তার এক বন্ধু।"
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের পাশের ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দুই যুবককে দৌঁড়ে পালাতে দেখা গেছে। তাদের একজনের গায়ে কালো ও অন্যজনের গোলাপী রঙের টি-শার্ট ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে একজন ছাত্রীর প্রেমিক। পুলিশ আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করছে।