- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক। ঢাকা
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, কমিশন যদি দৃঢ়ভাবে আচরণবিধি প্রয়োগে সক্ষম না হয়, তাহলে কমিশনের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে এবং নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা সন্দেহের মধ্যে পড়বে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ইসির সংলাপের তৃতীয় দিনের দুই পর্বের বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। রাজনৈতিক দলগুলো ইসির প্রতি আহ্বান জানায়, বড় দলগুলো যদি আচরণবিধি না মানে, তাহলে ভোটকেন্দ্র দখল, অনিয়ম ও গোলযোগ সৃষ্টি হতে পারে। তারা আরও বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংলাপে উপস্থিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, “নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের নিয়ত পরিষ্কার। সবার সহযোগিতা পেলে ভালো নির্বাচন সম্ভব হবে। আইন পরিপন্থি কোনো কাজ হলে কমিশন ছাড় দেবে না। কঠোরভাবে আচরণবিধি প্রয়োগ করা হবে।”
সোমবারের সংলাপে মোট ১১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পাটি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), জাকের পার্টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)।
বিকল্পধারা বাংলাদেশের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, বড় দুই দল আচরণবিধি মানে না। আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কয়েকটি আসনে প্রার্থিতা বাতিল করলে অন্যরা সঠিকভাবে চলবে।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রস্তাব করেন, সংসদীয় ভোটের সঙ্গে গণভোটের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ভোটকেন্দ্র ও বুথ সংখ্যা বাড়াতে হবে।
ন্যাপের অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান উল্লেখ করেন, জনগণের মধ্যে ভোটে অনাস্থা রয়েছে, ইসিই যদি দৃঢ়তা দেখায়, তবে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এ বি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আচরণবিধি বাস্তবে কার্যকর করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
সংলাপে অংশ নেওয়া অন্যান্য দলও নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা দেন। জামানতের হ্রাস, সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণার নিয়ন্ত্রণ এবং মনিটরিং টিম গঠনের মতো বিষয় উঠে আসে।
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, “আমরা নির্বাচনকে সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেব। আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।” নির্বাচন কমিশনাররা আরও বলেন, অনিয়ম হলে ভোটগ্রহণ বাতিল, কেন্দ্র বাতিলসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ইসি কোনো ছাড় দেবে না।
আগামীকাল বুধবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামিসহ আরও ১২ দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।