- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-এর সম্ভাব্য অপব্যবহার ঠেকাতে কানাডার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এই সহযোগিতা কামনা করেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
সিইসি আরও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক পূর্ববর্তী তিনটি নির্বাচনকে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন, তাদের আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া হবে না।
আজ সকালে হাইকমিশনার অজিত সিং এবং কানাডা হাইকমিশনের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন ভবনে সিইসি নাসির উদ্দিনের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের জানান, প্রতিনিধিদল নির্বাচনের প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল, এবং ইসি তাদের সে বিষয়ে অবহিত করেছে। ইসি দেশব্যাপী বড় আকারে ভোটার সচেতনতা ও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে। এছাড়া প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কানাডা এই সব ক্ষেত্রে ইসিকে সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
নাসির উদ্দিনের ভাষ্যমতে, কানাডা বাংলাদেশে একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। তারা নারী ভোটারের অংশগ্রহণ এবং পার্বত্য অঞ্চলে ভোটার সচেতনতা কার্যক্রম সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন।
সিইসি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, নির্বাচন কমিশন আসন্ন নির্বাচনে এআই-এর অপব্যবহারকে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখছে। তিনি কানাডার কাছে এআই-এর অপব্যবহার রোধে করণীয় সম্পর্কে সহায়তা চেয়েছেন, কারণ কানাডায় সম্প্রতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তাদের এ বিষয়টি মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
নির্বাচনের তারিখ বা সম্ভাব্য সময়সীমা সম্পর্কে কানাডার হাইকমিশনার কোনো জিজ্ঞাসা করেছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, "উনি জানতে চেয়েছেন, ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ হয়েছে কি না। আমি বলেছি 'না'। সময়সীমা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সময়সীমা সম্পর্কে আপনারা যা জানেন, আমিও তাই জানি। যেদিন ভোট হবে, তার দুই মাস আগে আমি জানিয়ে দেব।"
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, তিনি ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করার জন্য বলেছেন এবং নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইইউকে বলা হয়েছে, তাদের ২৮টি দেশের পর্যবেক্ষকদের সমন্বয় করে পাঠানোর জন্য যেন আগেভাগে জানিয়ে রাখা হয়। "এজন্য আমরা তাদের আগেভাগেই স্বাগত জানিয়েছি," তিনি যোগ করেন।
নাসির উদ্দিন দৃঢ়তার সাথে বলেন, "যারা গত তিনটি নির্বাচনকে সার্টিফিকেট দিয়েছে, তাদের অনুমোদন দেব কেন? যেসব পর্যবেক্ষক গত তিনটি নির্বাচনকে খুব সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে, তাদের কি আমাদের নেওয়া উচিত? আমরা দেখেশুনেই নেব। যারা অভিজ্ঞ, নির্ভরযোগ্য এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে, তাদেরই নেব। যারা তিনটি নির্বাচনকে সার্টিফিকেট দিয়েছে, তাদের কোনোমতেই নয়।"