- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, “গুলশান থানায় দায়ের করা একটি চাঁদাবাজির মামলায় জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।”
এর আগে একই মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং একজন অপ্রাপ্তবয়স্ককে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা পুলিশ। চার প্রাপ্তবয়স্ক আসামির রিমান্ড চলছে।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে চাঁদা দাবি করার বিষয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর নাখালপাড়ায় অভিযানে চারটি চেক উদ্ধার করা হয়, যার সম্মিলিত মূল্য ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া আবদুর রাজ্জাকের বাড্ডার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ দুই লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
গুলশান থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান জানান, “এ মামলায় চাঁদাবাজির টাকা উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রাজ্জাকের আরেকটি ভাড়া বাসার সন্ধান মিলেছে।”
অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্ষায় অভিযুক্ত জানে আলম অপু ও আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানকে সংগঠনের সব পর্যায়ের দায়িত্ব এবং সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্যসচিব জাহিদ আহসানের স্বাক্ষরে প্রকাশিত নোটিশে বলা হয়, “গঠনতন্ত্রের ধারা ৩.১ অনুযায়ী সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
অপরদিকে, অভিযুক্ত জানে আলম অপু তার ফেসবুক পোস্টে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, “আমি গ্রেপ্তার হইনি, এবং কোথাও চাঁদাবাজিও করিনি। গুলশানের ঘটনায় আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত নই।” তিনি আরও জানান, পুরো ঘটনার ভিডিওর ব্যাখ্যা তিনি মিডিয়ার সামনে তুলে ধরবেন।
ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকেও তিনজনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় চাঁদাবাজি চক্রের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিক ও শিক্ষার্থীরা। সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি হয়েছে ছাত্র সংগঠনের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজির ঘটনায়।