গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪৫ জন আটক

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৪৫ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫ জনকে আটক করা হয়। পরে শুক্রবার ভোরে বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ২০ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে সকল আটককৃতদের সদর থানায় রাখা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর ইউনিয়নের খাটিয়াগড় চরপাড়া এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমদ বিশ্বাস বাদী হয়ে একটি মামলা প্রস্তুত করছেন। মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

আটককৃতদের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও আদালতে না তোলার বিষয়ে ওসি সাজেদুর রহমান বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের আদালতে তোলা হবে। পাঁচজন নিহত এবং সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও মামলা না হওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিন গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও কারফিউ এখনও কার্যকর রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসন কারফিউ জারি করে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী গতকাল সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক ব্রিফিংয়ে জানান, কারফিউয়ের সময় দ্বিতীয় দফায় বর্ধিত করে শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং আংশিক শিথিল করে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বলবৎ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক, যার মধ্যে অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধ।

কারফিউ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর হওয়ায় আজ সকাল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও জনজীবন এখনো সম্পূর্ণ ফিরে আসেনি। প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।