- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার করে বিভিন্ন দেশে গড়ে তোলা প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এই তথ্য উঠে এসেছে।
রোববার রাষ্ট্রায়াত অতিথি ভবন যমুনায় এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ও সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে এই তথ্য হস্তান্তর করেন।
সিআইসি সূত্রে জানা গেছে, নয়টি দেশে মোট ৩৫২টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা বাংলাদেশিরা টাকার বিনিময়ে অর্জন করেছেন। এই দেশগুলো হল— অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমেনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মাল্টা, সেন্ট লুসিয়া ও তুরস্ক।
আহসান হাবিব জানান, দেশে বসে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা সরেজমিনে তদন্ত পরিচালনা করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থপাচার করে গড়ে তোলা ৩৪৬টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। তবে এটি শুধুমাত্র অনুসন্ধানের আংশিক চিত্র।
সিআইসি এই সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি অর্থপাচারে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে। তিনি জানান, এই প্রক্রিয়ায় ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অর্থপাচারে জড়িতদের চিহ্নিত করে দুদক, সিআইসি ও পুলিশসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে স্থানান্তর করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করা ও লুটপাটকে ভয়াবহ দেশদ্রোহিতা হিসেবে গণ্য করা উচিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এই লুটেরাদের আইনের আওতায় আনা অপরিহার্য।
প্রধান উপদেষ্টা সিআইসিকে নির্দেশ দিয়েছেন, অনুসন্ধান আরও বিস্তৃত করতে এবং সম্ভাব্য অন্যান্য দেশে তদন্ত চালিয়ে দেশের সম্পদ ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে।