- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
স্পেনের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচগুলোর একটি, এল ক্লাসিকো, এবারের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ ২-১ ব্যবধানে জয়ী হলেও পুরো ম্যাচটি উত্তেজনায় ভরপুর ছিল। ম্যাচের আগে বার্সেলোনার তরুণ তারকা লামিনে ইয়ামালের মন্তব্য, “রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে আর অভিযোগ করে,” ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়। ম্যাচ শুরুর পর সেই উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে যখন ইয়ামাল বল স্পর্শ করেন, তখন বার্নাব্যু স্টেডিয়াম দর্শকদের উল্লাসে ভরে ওঠে।
রিয়াল মাদ্রিদের ২-১ ব্যবধানে জয় লাভের পরেও উত্তেজনা থেমে থাকেনি। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে, রেফারি সিজার সোটো গ্রাদো বার্সেলোনার মিডফিল্ডার পেদ্রিকে লাল কার্ড দেখান। এর পরই দুই দলের ডাগআউটে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে মাঠ ছাড়লে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। চুয়ামেনি প্রথম হলুদ কার্ডটি পান ভিনিসিয়ুসকে ফাউল করার কারণে।
ডাগআউটে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ভিনিসিয়ুস এবং ইয়ামালের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। পরে রিয়াল মাদ্রিদের কারভাহাল, ইয়ামালের দিকে ইশারা করে বলেন, "তুমি অনেক কথা বলো, এখন বলো দেখি!" ইয়ামাল এগিয়ে আসলে তাকে থামান রিয়াল মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। এরপর দুদলের খেলোয়াড়রা এসে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ভিনিসিয়ুস কিছু আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন ইয়ামালের উদ্দেশ্যে, “কী ব্যাপার! ব্যাক পাস ছাড়া আর কিছুই তো করলেন না, শুধু ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলেন।”
রেফারির রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিশৃঙ্খলায় ছয় জন খেলোয়াড় হলুদ কার্ড এবং একজন খেলোয়াড় সরাসরি লাল কার্ড পান। হলুদ কার্ড পাওয়া খেলোয়াড়রা হলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ফেরান তোরেস, আলেহান্দ্রো বালদে, ফারমিন লোপেজ, রদ্রিগো এবং এদার মিলিতাও। রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিনকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়।
ম্যাচের শেষের দিকে ইয়ামালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হলেও, রিয়াল তারকা কারভাহালের উত্তপ্ত জবাব উত্তেজনার পরিবেশ আরও বাড়িয়ে তোলে। কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইয়ামালকে রিয়ালের বিপক্ষে মূল কৌশল হিসেবে দেখা গেলেও, রাফিনিয়া এবং রবার্ট লেভানডফস্কির অনুপস্থিতিতে ইয়ামাল তেমন কিছু করতে পারেননি। ৯০ মিনিটের ম্যাচে তিনি দুটি শট এবং দুটি সুযোগ তৈরি করতে সক্ষম হন।
বার্সেলোনা মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ম্যাচের উত্তেজনা সম্পর্কে বলেন, “ঠিক কী ঘটেছিল আমি দেখিনি। শুধু দেখলাম অনেক লোক জমেছে। রেফারি বাঁশি বাজানোর পর রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা লামিনের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে, এটা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে। বিষয়টা তাদেরই জিজ্ঞেস করা ভালো।”
এল ক্লাসিকো এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে পরিণত হয়, যা শুধু ম্যাচের ফলাফলের চেয়েও অনেক বেশি কিছু প্রমাণ করে, এবং ফুটবল দুনিয়ায় বারবার স্মরণীয় হয়ে থাকবে।