- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক | ঢাকা:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার বিষয়ক গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল আড়াইটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই সিদ্ধান্ত জানান।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের পর সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের মতো গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করলে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে এবং সংস্কার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে না।”
প্রধান উপদেষ্টা ভাষণে জানান, গণভোটে জনগণ চারটি সংস্কার প্রস্তাবের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দেবেন। প্রশ্নটি হবে: “আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার–সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?”
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই সনদের প্রক্রিয়ায় গঠন করা হবে। জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট—একটি নিম্নকক্ষ ও ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ, যা ভোটের অনুপাতে গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বিরোধী দলের ভূমিকা শক্তিশালীকরণ এবং স্থানীয় সরকার ক্ষমতায়নসহ ৩০টি প্রস্তাবে রাজনৈতিক ঐকমত্য বাস্তবায়নে পরবর্তী সরকার বাধ্য থাকবে। জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ হলে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়েই একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই পরিষদ ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করবে। এরপর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, যার মেয়াদ নিম্নকক্ষের মেয়াদ পর্যন্ত বহাল থাকবে।
তিনি বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদের অঙ্গীকার অনুযায়ী এই সনদকে সংবিধানের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজন দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, তবে তা সফলভাবে সম্পন্ন করতে সকল পক্ষের আস্থা ও সহমত অপরিহার্য।